Menu

নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর মাধ্যমিক ভূগোল

নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর; এই আর্টিকেলে আমরা পাবো মাধ্যমিক প্রাকৃতিক ভূগোলের বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর যা তোমাদের আগামী মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বিশেষ উপযোগী হবে।

 

Table of Contents

মাধ্যমিক ভূগোল – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ

নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 

নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১) পুঞ্জিত ক্ষয় কাকে বলে?

উত্তরঃ আবহবিকার ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার পর অভিকর্ষজ টানে সেই শিলাচূর্ণ পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসাকেই পুঞ্জিত ক্ষয় বলে।

২) দোয়াব কাকে বলে?

উত্তরঃ দোয়াব কথাটির অর্থ হল – দো মানে দুই এবং আব মানে হল জল অর্থাৎ দুটি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে দোয়াব বলে। যেমন – গঙ্গাযমুনা দোয়াব অঞ্চল।

৩) ক্ষয়সীমা কাকে বলে?

উত্তরঃ ক্ষয়কারী শক্তিগুলি ভূপৃষ্ঠের নীচে যতদূর পর্যন্ত ক্ষয় করতে পারে তাই হল ক্ষয়সীমা। সমুদ্রতলই হল শেষ ক্ষয়সীমা। এই ক্ষয়সীমা ধারনার প্রবর্তক হলেন J.W. Powell.

৪) নদীর পুনযৌবন লাভ কাকে বলে?

উত্তরঃ ভূমিঢালের পরিবর্তনের ফলে নদীর নিম্নক্ষয় করার ক্ষমতা পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়াকে নদীর পুনযৌবন লাভ বলে। ভূআলোড়নের ফলে নদীর ক্ষয়সীমা পরিবর্তন হলে, বৃষ্টিপাতের আধিক্যে জলের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে বা কোনো কারনে নদীবাহিত বোঝার পরিমাণ কমে গেলে নদী পুনযৌবন লাভ করে।

৫) নদীর ধারণ অববাহিকা বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ নদীর গতিপথে উচ্চ অংশে অর্থাৎ পার্বত্য অঞ্চলে বা উচ্চমালভূমি অঞ্চল থেকে নিম্ন সমভূমি অঞ্চলের দিকে নেমে আসে। নদীর উৎস অঞ্চলকেই ধারণ অববাহিকা বলে। যেমন উত্তরাখণ্ডের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল গঙ্গা নদীর ধারণ অববাহিকা।

৬) নিক পয়েন্ট বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ কোনো নদীর পুনযৌবন লাভের ফলে নতুন ঢাল ও পুরোনো ঢালের সংযোগস্থল বরাবর যে খাঁজ গঠিত হয়, তাকে নিক পয়েন্ট বলে। নিক পয়েন্টে অনেক সময় জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়।

৭) প্রপাতকূপ বা প্লাজপুল কাকে বলে?

উত্তরঃ জলপ্রপাতের জল প্রবলবেগে যেখানে পড়ে, সেখানে জলস্রোতের আঘাতে ও ঘূর্নীর সৃষ্টি হওয়ায় বুদবুদ ক্ষয়ের মাধ্যমে যে বিশালাকার হাঁড়ির মতো গোলাকার গর্ত সৃষ্টি হয় তাকে প্রপাতকূপ বা প্লাজপুল বলে।

৮) মিয়েন্ডার কাকে বলে?

উত্তরঃ সমভূমি অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে চড়া সৃষ্টি হলে সেই বাধা এড়ানোর জন্য নদী আঁকাবাঁকা গতিপথে প্রবাহিত হয়, নদীর এই আঁকাবাঁকা গতিপথকেই মিয়েন্ডার বলে। তুরস্কের মিয়েন্ডারেস নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথ অনুসারেই এই নামকরণ হয়েছে।

৯) খাঁড়ি কাকে বলে?

উত্তরঃ নদী মোহনার শেষ প্রান্তে এসে যখন সমুদ্র বা হ্রদে এসে মেশে তখন সেখানে ফানেল আকৃতির নদী মোহনা সৃষ্টি হলে তাকে খাঁড়ি বলে। টেমস, লা-প্লাটা প্রভৃতি নদীর মোহনায় খাঁড়ি দেখতে পাওয়া যায়।

১০) বার্গস্রুন্ড কাকে বলে?

উত্তরঃ উচ্চ উপত্যকা দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় হিমবাহ ও পর্বত গাত্রের মধ্যে গভীর ফাটল বা ফাঁক সৃষ্টি হয়, এরূপ ফাটল হিমবাহের পৃষ্ঠদেশ থেকে তলদেশে শিলাস্তর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে এবং পর্বতারোহীদের বিপদের সৃষ্টি করে, একে বার্গস্রুন্ড বলে।

১১) হিমরেখা কী?

উত্তরঃ উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে তীব্র শীতলতার জন্য, যে সীমারেখার ওপর সারাবছরই জল জমে বরফে পরিণত হয়ে থাকে অথবা যে সীমারেখার ওপর চিরতুষারক্ষেত্র থাকে তাকে হিমরেখা বলে।

১২) হিমানী সমপ্রপাত বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ পর্বতের ওপরে অবস্থিত হিমবাহ থেকে যখন বরফের স্তূপ ভেঙে প্রবলবেগে নীচে পড়ে তখন তাকে হিমানী সমপ্রপাত বলে।
১৩) ব্লো আউট বা অপসারণ সৃষ্ট গর্ত কাকে বলে?

উত্তরঃ প্রবল বায়ুপ্রবাহে বালুস্তর একস্থান থেকে অপসারিত হলে, সেখানে বড়ো বড়ো গর্ত বা অবনমিত অঞ্চল সৃষ্টি হয়, একেই ব্লো-আউট বা অপসারণ সৃষ্ট গর্ত বলা হয়ে থাকে।

১৪) ফিয়র্ড উপকূল গভীর হয় কেন?

উত্তরঃ সমুদ্র উপকূলে পার্বত্য হিমবাহ তার উপত্যকাকে এমন গভীরভাবে ক্ষয় করে যে, হিমবাহ উপত্যকা সমুদ্রপৃষ্ঠ অপেক্ষাও নীচু হয়ে যায়। তাই ফিয়র্ড উপকূল গভীর হয়।

১৫) মরুদ্যান কাকে বলে?

উত্তরঃ দীর্ঘদিন ধরে কোনো একটি অঞ্চলে বালিরাশি অপসারিত হতে থাকলে অঞ্চলটি ক্রমশ অবনমিত হয়ে পড়তে পড়তে একসময় ভৌমজলস্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে ফলে এই স্থানে জলাশয় সৃষ্টি হয়ে ক্রমশ উদ্ভিদ জন্মে অঞ্চলটিতে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মরুভূমির এরকম স্থানকেই মরূদ্যান বলা হয়ে থাকে।

১৬) হামাদা কী?

উত্তরঃ মরু অঞ্চলে বায়ুর অপসারণ ক্রিয়ার ফলে বালুকণা অপসারিত হলে নীচের শিলাস্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এরূপ বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে উন্মুক্ত শিলাস্তর দিয়ে গঠিত মরুভূমিকে শিলাময় মালভূমি বা হামাদা বলে। সাহারায় এই রূপ মরুভূমি প্রধানত হামাদা নামে পরিচিত।

১৭) আর্গ কাকে বলে?

উত্তরঃ পৃথিবীর যে সকল মরু অঞ্চলে বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে বালুকাপ্রান্তর দেখা যায় তাকে বালুকাময় মরুভূমি বলে। বালুকাময় মরুভূমি সাহারায় আর্গ নামে পরিচিত। পৃথিবীর বৃহত্তম আর্গ হল সৌদি আরবের রাব-এল-খালি।

১৮) ওয়াদি কী?

উত্তরঃ মরুভূমিতে বৃষ্টিতে জলধারার ক্ষয়কার্যের ফলে যে সমস্ত ছোটো ছোটো অনিত্যবাহী ক্ষণস্থায়ী প্রকৃতির নদী সৃষ্টি হয়, তাদের শুষ্ক নদীখাতকে ওয়াদি বলে।

১৯) টেরিস কাকে বলে?

উত্তরঃ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয়কার্য চলার সময় ইনসেলবার্জ গুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোটো ছোটো টিলার আকার ধারণ করে। এই ছোটো ছোটো অবশিষ্ট পাহাড়গুলিকে বলে টেরিস।

২০) লোয়েস বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ লোয়েস একপ্রকার অতিসূক্ষ হলুদ বর্ণের বায়ু তাড়িত ধূলি। সাধারণত মরুভূমি থেকে অতিসূক্ষ বায়ু দ্বারা বাহিত হয়ে বহুদূরে অবস্থিত কোনো নিম্নভূমিতে সঞ্চিত হলে তাকে লোয়েস বলে। গোবি মরুভূমির বালিতে হোয়াং হো নদীর অববাহিকায় এরকম সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে।

 

আরো পড়ুন উষ্ণতার তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো।

 

অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলি ভালোভাবে পড়ার জন্য। এভাবেই চিরদীন www.artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর এর মতো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলগুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।

বিঃ দ্রঃ নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলি তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু পাঠ্য বইয়ের সাহায্য নিতে হয়েছে এবং অন্যান্য অংশ থেকেও সাহায্য নিয়েছি আমরা। তাই নদী-হিমবাহের কার্য সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো সমস্যা হয় তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়, এবং তোমাদের অভিযোগের কথা জানাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!