প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে খ্রিস্টপূর্ব শতকে প্রতিবাদী ধর্ম; আমাদের আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হল কল্যাণী ইউনিভার্সিটির অন্তর্গত বি এ প্রথম সেমিস্টারের সিসি কোর্সের ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় যা কিনা প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে খ্রিস্টপূর্ব শতকে প্রতিবাদী ধর্ম। চলো তাহলে দেখে নেওয়া যাক আজকের এই আলোচনা পর্বটি-
এখানে মূলত আমরা দেখব উৎস তাৎপর্য ব্যাখ্যা থেকে প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ ও নব্য প্রস্তর যুগের বিস্তৃত সমীক্ষা তারপরে পাব হরপ্পা সভ্যতা- বৈদিক যুগ থেকে ষোড়শ মহাজনপদের পথে যাত্রা এবং সর্বশেষে দেখব বৈদিক ধর্ম থেকে জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের পথে যাত্রা সূত্রপাত।
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে খ্রিস্টপূর্ব শতকে প্রতিবাদী ধর্ম
প্রাচীন ভারতের ইতিহাস চর্চার স্বরূপ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, সেই সময়কার মানুষের ইতিহাস চেতনা ছিল না তা নয়, তারা মানুষের জীবনের চেয়েও প্রিয় অনুশীলন ও আলোচনায় যতটা আগ্রহী ছিলেন, ঐতিহাসিক জীবনের আলোচনায় ততটাই উদাসীন থেকে গেছেন। তারা চেয়েছিলেন’ ত্যাগের মধ্য দিয়ে ভোগ আস্বাদন করতে। মানুষের মধ্যে দেবত্বের উদ্বোধন বা জীবনকে ভোগ ঐশ্বর্য দিয়ে সাজাতে নয়। ফলে এদেশে দর্শন সৃষ্টি হয়েছে, অনুপম সাহিত্য রচিত হলেও ইতিহাস গ্রন্থ রচিত হয়নি তেমনভাবে। ইতিহাস গ্রন্থ রচিত না হলেও প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের নানা তথ্য ও উপাদান তখনকার দিনে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় রচিত গ্রন্থাদিতে স্থান পেয়েছে। এই গ্রন্থ গুলির কোনটির সংস্কৃত কোনটি পালিকা তামিল ভাষায় লেখা হয়েছিল।
হরপ্পা সভ্যতা– বৈদিক যুগ থেকে ষোড়শ মহাজনপদের পথে যাত্রা
তাম্রাশ্মীয় সংস্কৃতির পরিণত রুপ সিন্ধু নদের তীরবর্তী হরপ্পা সংস্কৃতির মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু তাতেও সংস্কৃতির পরিণত রূপকথা সিন্ধু সভ্যতার উৎপত্তি কিভাবে হয় এবং কে বা কারা সংস্কৃতির স্রষ্টা তা নিয়ে পন্ডিত মহলে বিতর্ক রয়েছে। আজ থেকে প্রায় চার হাজার পাঁচশো বছর আগে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম সভ্যতার উদয় হয় এবং এই সভ্যতার প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সমসাময়িক। সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কারের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মার্কিন প্রত্নতাত্ত্বিক পশ্চিম পাঞ্জাবের মন্টোগোমারি এবং বর্তমান শাহীওয়াল জেলার হরপ্পায় প্রথম নিদর্শন আবিষ্কার করেন। এর বেশ কয়েকবছর পর 1853, 1856 ও 1872 খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার কানিংহাম আরো কিছু প্রত্নসামগ্রী আবিষ্কার করেছিলেন।
বৈদিক যুগ থেকে ষোড়শ মহাজনপদের পথে যাত্রা
ঋক বৈদিক যুগে আর্যদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল মূলত উপজাতি কেন্দ্রিক। রক্তের বন্ধন দ্বারা পরিবারের বন্ধন স্থির করা হতো। পরিবারের প্রধান বা কুলপতি ছিলেন পরিবারের শাসনকর্তা। কতগুলি পরিবারের রক্তের সম্পর্ক দ্বারা যুক্ত হলে গঠিত হতো গোষ্ঠী বা উপজাতি। ঋকবেদের যুগে উপজাতি গুলির মধ্যে প্রায়ই যুদ্ধ লেগে থাকত। কৃষি ও ভূমির অধিকার নিয়ে বিভাগ কে কেন্দ্র করে যুদ্ধ-বিগ্রহ চলত। পরবর্তী বৈদিক যুগের সমাজে বর্ণভেদ ও শ্রেণীভেদ প্রথা কঠোর হয়ে উঠেছিল। বিভিন্ন শ্রেণী বা বর্ণের মধ্যে বর্ণবৈষম্য বাড়ে এবং এক শ্রেণী থেকে অন্য শ্রেণীতে প্রবেশ সহজ ছিল না। রাজন্য বা ক্ষত্রিয় রা সামরিক শক্তির জোরে ভূমি ও শাসনক্ষমতা দখল করে শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে। পুরোহিতরা যাগযজ্ঞ পূজা পদ্ধতি নিজেদের হাতে রেখে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী রূপে বিশেষ মর্যাদার আসন লাভ করতে থাকে সমাজে।
বৈদিক যুগের সামাজিক বিভাজন কেমন ছিল?
ব্রাহ্মণদের পুরনো অভিজাত্ত, বৈশ্য ও শূদ্র দের ক্রমবর্ধমান আরথ্থিক সমৃদ্ধি, ক্ষত্রিয় দের প্রশাসনিক কর্তৃত্ব এবং জনসাধারণের সীমাহীন দরিদ্র সমাজের ভারসাম্য বিঘ্নিত করেছিল। ফলে হিংসা-দ্বেষ ও স্বার্থান্ধতার বিষবাষ্পে সমাজের বাতাস দূষিত হয়। এই অবস্থায় উন্নতির জন্য বিভিন্ন বর্ণ ও শ্রেণীর মধ্যে সম্প্রীতি মৈত্রী ও সহযোগিতার বাতাবরণ সৃষ্টি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। মানুষের মনেই মানবিকতা জাগরণের ডাক দিলেন 2 মহামানব যাদের মধ্যে একজন হলেন বুদ্ধদেব এবং অন্যজন বর্ধমান মহাবীর। প্রায় একই সময়ে ভারতের বাইরে অধীনে কনফুসিয়াস এর আবির্ভাব ঘটেছিল সামাজিক রূপান্তরের স্বার্থে।
বৈদিক ধর্ম থেকে জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের পথে যাত্রা সূত্রপাত
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতের কেন্দ্রীয় শক্তি ছিলনা। বৌদ্ধ ও জৈন গ্রন্থ থেকে জানা যায় 16 টি রাজ্যের বা জনপদের বিভক্ত ষোড়শ মহাজনপদের ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। শোনা যায় পরবর্তীতে এই 16 টি মহাজনপদের মধ্যে মগদ হয়ে উঠেছিল সর্বশক্তিমান। তবে এই সময় প্রকৃতির জনপদ ছিল কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিক মহলে বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে। কেননা পাণিনির সূত্র থেকে 30 টি জনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়। সমসাময়িক ভারতের রাজনৈতিক চিত্র এবং 16 টি রাজ্যের প্রকৃতি আলোচনা করলেই পরিষ্কার হয়ে উঠবে।
বিঃ দ্রঃ আমাদের আজকের আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় ছিল প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে খ্রিস্টপূর্ব শতকে প্রতিবাদী ধর্ম; যা তোমাদের অর্থাৎ কল্যাণী ইউনিভার্সিটির বিএ ক্লাসের ফার্স্ট সেমিস্টার ইতিহাসের সিলেবাস এর অন্তর্গত। আর্টিকেলটি তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু রেফারেন্স বইয়ের সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছে। যদিও যার জন্য কোন প্রকাশকের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি। তাই আমাদের আজকের এই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে খ্রিস্টপূর্ব শতকে প্রতিবাদী ধর্ম আর্টিকেলটি নিয়ে তোমাদের যদি কারো কোন রকম সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আমাদের ইমেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়. আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যা দূরীকরণে.