বাক্যের প্রকারভেদ; গঠন অনুসারে বাক্যকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেগুলি হল – সরল বাক্য, জটিল বাক্য, যৌগিক বাক্য এবং মিশ্র বাক্য।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মূলত বাক্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো, যা তোমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক বাক্যের প্রকারভেদ এর এই বিস্তারিত আর্টিকেলটি।
মাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ – বাক্যের প্রকারভেদ
১) সরল বাক্যঃ
বাক্যের প্রকারভেদের প্রথমেই আমরা কথা বলবো সরল বাক্য সন্মন্ধে। যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য বা কর্তা ও একটি মাত্র বিধেয় বা সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে সরল বাক্য বলে।
যেমন – বৃষ্টি পড়িতেছে, এই বাক্যটিতে একটি মাত্র উদ্দেশ্য উদ্দেশ্য বৃষ্টি ও একটি মাত্র বিধেয় পড়িতেছে ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং গঠনগত দিক থেকে বৃষ্টি পড়িতেছে এই বাক্যটিকে আমরা সরল বাক্য বলতেই পারি।
২) জটিল বাক্যঃ
পরস্পর সাপেক্ষ দুটি খণ্ডবাক্যের সমন্বয়ে যে একটি পূর্ণ বাক্য গঠিত হয় তাকে জটিল বাক্য বলে। অর্থাৎ যে বাক্যে আমরা দুটি বা তার বেশি খন্ড বাক্যকে একসাথে অবস্থান করে তাকেই আমরা সাধারণত জটিল বাক্য বলে থাকি।
যেমন- যদি তুমি আস তাহলে আমি যাব। জটিল বাক্যে সাধারণত যদি, তাহলে, যিনি, তিনি, যা-তা, যে-সে, ইত্যাদি শব্দ যুক্ত হয়ে বাক্য গঠন করে।
৩) যৌগিক বাক্যঃ
বাক্যের প্রকারভেদের তৃতীয় ধরণটি হল যৌগিক বাক্য। পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা বহু সরল বা জটিল বাক্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি পূর্ণ বাক্যকে যৌগিক বা সংযুক্ত বাক্য বলে। এই ধরণের পূর্ণ বাক্যে নিরপেক্ষ বাক্যগুলি এবং, ও, আর কিংবা, নতুবা, ইত্যাদি অব্যয় দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত থাকে।
যেমন- তুমি যাহাকে ভালোবাসো সে ধনী বটে কিন্তু সৎ নহে। রাত্রি প্রভাত হইল এবং সঙ্গে সঙ্গে পাখির কূজন শুরু হইল।
৪) মিশ্রবাক্যঃ
দুই বা ততোধিক সম্পূর্ণ স্বাধীন সরল, জটিল, যৌগিক বাক্য যদি পাশাপাশি মিলিত হয়ে বৃহত্তর অখন্ড বাক্যের রূপ লাভ করে এবং মনের পরিপূর্ণ ভাব প্রকাশে সহায়ক হয়, তাহলে তাকে মিশ্রবাক্য বলে।
যেমন- সে যে ভালো গান তা আমি জানতাম, কিন্তু সে ভালো ছবি আঁকে, সে কথা জানতাম না। এখানে প্রথম বাক্যটি জটিল, দ্বিতীয় বাক্যটি যৌগিক বাক্যের মতো যুক্ত, আবার সেটি সরল বাক্যও বটে, এবং শেষ বাক্যটি সরল। সুতরাং এখানে তিন ধরণের বাক্যের মিশ্রণ ঘটে একটি পরিপূর্ণ ভাব প্রকাশ করেছে, ফলত এটি একটি মিশ্রবাক্যের প্রকৃত উদাহরণ।
আরো পড়ুন বাক্য বলতে কী বোঝ? একটি আদর্শ বাক্য গঠনের শর্ত গুলি বিষদে আলোচনা করো।
আজকের আমাদের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় ছিল বাক্যের প্রকারভেদ, যা করা হয়েছে বাক্যের গঠন অনুসারে প্রকারভেদ। এর পরবর্তী অধ্যায়ে আমরা বাক্যের অর্থানুসারে প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করবো যা তোমাদের মাধ্যমিক এবং বাংলা ব্যাকরণ শেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হবে।
বিঃদ্রঃ আজকের এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে কিছু অভিজ্ঞ শিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে এবং তার সাথে সাথে কিছু পাঠ্য বইয়েরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যদিও শিক্ষকদের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিন্তু কোনো প্রকাশকের সাথে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি, তাই এই নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো রকম অভিযোগ থেকে থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।