সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি; আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নিয়ে হাজির হয়েছে WBCHSE BOARD এর একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান অর্থাৎ Education এর শিক্ষার তাৎপর্যপূর্ণ উপাদান অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর যা হল সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি এর প্রকারভেদগুলি আলোচনা করো। সহপাঠ্যক্রমিক কার্জাবলির কয়েকটি উপযোগিতা লেখো। তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক –
প্রশ্নঃ সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি এর প্রকারভেদগুলি আলোচনা করো। সহপাঠ্যক্রমিক কার্জাবলির কয়েকটি উপযোগিতা লেখো।
উত্তরঃ যে সকল কার্জাবলি শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার জীবনের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের সাহায্য করে, সেই কার্জাবলি গুলিকে একত্রে সহপাঠ্যক্রমিক কার্জাবলি বলা হয়।
সহপাঠ্যক্রমিক কার্জাবলিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন – ক) শরীর চর্চামূলক কার্যাবলি, খ) মানসিক কার্যাবলি ও গ) সামাজিক কার্যাবলি।
শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশে বিদ্যালয়ে যে সহপাঠ্যক্রমিক কার্জাবলি গ্রহন করা হয় সেগুলি হল –
ক) শরীর চর্চামূলক কার্যাবলিঃ
শরীর চর্চামূলক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর দেহ, মন, কর্মদক্ষতা ও নানান সামাজিক গুণাবলির বিকাশ ঘটায়। যেমন – ব্যায়াম, খেলাধুলা প্রভৃতি।
খ) মানসিক কার্যাবলিঃ
যে সকল সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশে এবং তার সম্প্রসারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করে সেগুলিকে মানসিক সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি বলা হয়। যেমন কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, মাটির কাজ ইত্যাদি।
এই মানসিক কার্যাবলিকে আবার কতগুলি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন –
১) আত্মপ্রকাশ মূলক কার্যাবলি, যা শিক্ষার্থীকে প্রকাশ হতে সাহায্য করে। যেমন – সাহিত্য সভা, বিতর্ক সভা, অভিনয় ইত্যাদি।
২) রসবোধ মূলক কার্যাবলি, যা শিক্ষার্থীকে রসোপলব্ধি মূলক বোধ জাগাতে সাহায্য করে। যেমন – আবৃত্তি, শিক্ষা-ভ্রমন, সভার আয়োজন, কৌতুক ইত্যাদি।
৩) অবসর জীবন কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অবসর জীবনযাপনে সাহায্য করে। যেমন – শব্দকোষ তৈরি, হবি, বিজ্ঞান ও সাহিত্য বিষয়ক আলোচনা ইত্যাদি।
৪) সৃজনশীল কার্যাবলি শিক্ষার্থীর সৃজন মূলক বিকাশে সাহায্য করে। যেমন – গল্পরচনা, কবিতা লেখা, গানবাজনা, অঙ্কন, নৃত্য ইত্যাদি।
গ) সামাজিক কার্যাবলিঃ
যে সকল কার্যাবলি শিক্ষার্থীর সামাজিক গুণাবলির বিকাশে সাহায্য করে, সেই কার্যাবলিকে সামাজিক কার্যাবলী বলে।
সামাজিক কার্যাবলিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেগুলি হল –
১) সেবামূলক কার্যাবলি, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেবামূলক মনোভাব গড়ে তোলে ও সেবাপরায়ন হতে সাহায্য করে। যেমন – স্বাস্থ্য সপ্তাহ পালন, সাক্ষরতা কর্মসূচি, NCC, NSS, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি।
২) সামাজিক প্রশাসনমূলক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে, গণতান্ত্রিক ভাবধারার দ্বারা নেতৃত্বদানের গুনের বিকাশ ঘটায়। যেমন – বিদ্যালয়ে সংসদ গঠন, সমবায় সমিতি, সঞ্চয় প্রকল্প ইত্যাদি।
এককথায় বলা যায় শিক্ষায় সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি এর গুরুত্ব অপরিসীম।
সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলির উপযোগিতাঃ
ক) সর্বাঙ্গীণ বিকাসঃ
শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশে সাহায্য করে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি। যেমন – দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক বিকাশ ইত্যাদি।
খ) একঘেয়েমি দূরীকরণঃ
সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈচিত্রপূর্ণ শিক্ষাদানের মাধ্যমে একঘেয়েমি দূর করে ও আত্মনির্ভরশীল করে তোলে।
সবশেষে বলা যায় সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার প্রকৃত লক্ষে পৌঁছাতে ও ব্যক্তির পরিপূর্ণ বিকাশে নানা দিক থেকে সাহায্য করে।
Read More পাঠক্রম বলতে কী বোঝো? আধুনিক পাঠক্রমের বৈশিষ্ট গুলি আলোচনা করো।
অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ার জন্য। এভাবেই চিরদিন আর্টস স্কুল ডট ইন এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা এর মতো আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি এবং সেগুলো পরে তোমরা তোমাদের আগামী পরিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারো।
বিঃ দ্রঃ এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে কিছু অভিজ্ঞ শিক্ষক দের পরামর্শ নিয়ে এবং তার সাথে সাথে কিছু পাঠ্য বইয়ের ও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যদিও শিক্ষকদের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিন্তু কোনো প্রকাশকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি, তাই এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনোরকম সমস্যা থেকে থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।