Menu

অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো

অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতাঃ আজকের আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ছাত্র ছাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রস্ন যা কিনা অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। যা তোমাদের আগামী মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

মাধ্যমিক বাংলা – অদল-বদল – পান্নালাল প্যাটেল

অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা

 

প্রশ্নঃ অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ সাহিত্যক্ষেত্রে নামকরণ হল লেখকের বিষয়গত ভাব-উদ্দেশ্যের এক শিল্পমাত্রিক এবং সংহত পূর্বাভাস। গুজরাতি সাহিত্যের অন্যতম স্রষ্টা পান্নালাল প্যাটেল রচিত অদল-বদল গল্পের নামকরণও এর ব্যতিক্রম নয়।

অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা তিনটি বিষয়গত দিক থেকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে, যেগুলি হল-

ক) কাহিনিগত দিক থেকে নামকরণঃ

গল্পের মূল কাহিনি হল দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের সতীর্থের মধ্যে গভীর সৌভাতৃবোধে জামা অদল-বদল করা। অমৃত ও ইসাব, দরিদ্র কৃষক পরিবারের দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। মাতৃহারা পিতার শাসনে পালিত ইসাব একদিন ছিঁড়ে যাওয়া জামার বিকল্প হিসেবে নতুন জামা পায়। তার বাবা সুদে ঋণ করে সেই জামা কিনে দেয়। সুতরাং সেই জামা সে মহার্ঘ স্বরূপ পায়; বাবার কড়া নির্দেশ সহযোগে। অন্যদিকে অমৃত ইসাবের জামা দেখে প্রচুর বায়না করে বাবা-মায়ের কাছ থেকে অবিকল একইরকম জামা আদায় করে নেয়। মায়ের কিছু সাবধান বানীও ছিল ওই জামার ব্যাপারে।

তারপর, দুই বন্ধু মিলে হোলির দিনে, একই রঙের একই মাপের জামা পরে বেরোয়। দুষ্টু ছেলেরা তাদের একই মাপের জামা, একই বেশ দেখে তাদের একই রকম গায়ের জোর কিনা? তা পরিক্ষা করতে উৎসাহী হয়ে পড়ে। অমৃত মায়ের নিষেধাজ্ঞা স্মরণ করে তা এড়িয়ে যায়। কিন্তু অদম্য ছেলেদের মধ্যে কালিয়ার কারণহীন কুস্তির কেরামতিতে অমৃত কুপোকাত হয়।

বন্ধুর এই হেনস্তা সহ্য করতে না পেরে ইসাব কালিয়াকে কুস্তির হিসাব বুঝিয়ে ছাড়ে। যদিও তাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে যায়। পরিস্থিতি ঘোড়ালো হয়ে পড়ে। ইসাব যখন বাবার মারের কথা স্মরণ করে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে, তখন অমৃত বন্ধুর মাতৃহীন অসহায়তা ও নিজের মায়ের কাছে নিরাপদ আশ্রয়ের কথা ভেবে তাদের জামা অদল-বদএর প্রস্তাব দেয় এবং ইসাবের সংকোচ বা দ্বিধা  সত্ত্বেও জামা অদল-বদল করে। এই বিষয়টিই তো গল্পের কেন্দ্রীয় কাহিনি।

খ) চরিত্রগত দিক থেকে নামকরণঃ

গল্পের নামকরণ দুটি চরিত্রের ওপর অপরিসীম প্রভাব বিস্তার করে- যারা হলেন অমৃত এবং ইসাবের বাবা পাঠান বা হাসান।

১) অমৃতঃ

ভীত ইসাবকে রক্ষার জন্য অমৃত তার অক্ষত জামা ইসাবকে দিয়ে দেয়। এই সহমর্মিতাবোধ জাগার মধ্যে দিয়েই একজন সাধারণ কিশোরের মনের অদল-বদল ঘটে যেন মানবিক আকুলতায় পরিণত হয়ে ওঠে। তার চিন্তা-ভাবনার উদারতা ও উচ্চতা যেন মুহুর্তে স্বাভাবিক চাপল্যকে বদলে দিয়ে তার স্বভাবে গভীরতা দান করে।

২) ইসাবের বাবা পাঠানঃ

এই জামা অদল-বদল এর অন্যতম সাক্ষ্য পাঠান। অদল-বদলের এই ঘটনা তার মানসিকতারও বদল ঘটায়। এই ঘটনা সূত্রেই পাঠান মাতৃহীন সন্তানের প্রতি যথাযত দায়িত্ব পালনের বিষয়টি অন্তরে অনুভব করে। আবার, এই ঘটনায় গোটা গ্রামের মানসিকতা বদলের এক প্রচ্ছন্ন মোটিভও স্পষ্ট হয়ে যায়।

গ) তাৎপর্য অর্থের দিক থেকে নামকরণঃ

ধর্ম আমাদের আদিমতা ও নগ্নতাকে ঢাকার একটা পরিচ্ছদ স্বরূপ। তা মানুষের বাহ্যিক পরিচয়। ফলত, সেই ধর্ম স্বরূপ জামা অদল-বদল করলে মনুষ্যত্বের কোনো হেরফের হয় না; বরং মনুষ্যত্বই বৈচিত্রের আস্বাদ পেয়ে প্রসারিত হয়। তায় আমাদের সংকীর্ন স্বার্থ ভাবনার ওপরে উঠে এই রকম মানবিক অদল-বদল যেন হতে পারে শত বিছিন্ন সমাজে হয়ে স্নিগ্ধ শুশ্রূষার জল। সুতরাং তাৎপর্য অর্থের দিক থেকেও নামকরণ সার্থক।

 

আরো পড়ুন বহুরূপী – সুবোধ ঘোষ পূর্নাঙ্গ আলোচনা মাধ্যমিক বাংলা

 

অবশেষে তোমাদের অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা এর এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ার জন্য, এভাবেই www.artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তাদের উত্তর গুলি তুলে ধরতে পারি।

বিঃদ্রঃ অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো এই প্রশ্নের উত্তরটি তৈরি করতে আমাদের কিছু বইয়ের সহায়তা নিতে হয়েছে, তাই এই অদল-বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো এর আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!