জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারন; বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখাই হল জাতিসংঘের প্রধান কাজ। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছর সশস্ত্র বিশ্বে শান্তিকে বজায় রেখেছিল জাতিসংঘ। এই সময়ে বিশ্বের বহু জটিল সমস্যার সমাধান করেছিল জাতিসংঘ যার ফলে ওই ২০ বছর বিশ্বে শান্তি বজায় ছিল।
জাতিসংঘের ব্যর্থতা
প্রত্যেক আলোর যেমন একটা অন্ধকার দিন থাকে তেমনি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করলেও বহু ক্ষেত্রে জাতিসংঘ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল। যেমন, জার্মানি ক্রমাগত তার সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটালে লিগ কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যার জন্য শেষ পর্যন্ত ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে লিগের অবলুপ্তি ঘটে।

জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারনগুলি হলঃ
যেকোনো জিনিস বা কাজ যেমন একটি কারনে ঘটে না তেমনি জাতিসংঘের ব্যর্থতার পেছনে একাধিক কারন কাজ করেছিল। সেই কারন গুলিই আমরা একে একে নীচে আলোচনা করছি-
১. ভার্সাই সন্ধিঃ
অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারনগুলির মধ্যে অন্যতম হল ভার্সাই সন্ধি। ভার্সাই সন্ধির অনুমোদন দিয়ে জাতিসংঘ খুব ভুল করেছিল, কারন এটি ছিল জোরজবরদস্তি প্রতিশোধমূলক। জার্মানি, রাশিয়া, আমেরিকা এই সন্ধিকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে রাজি ছিল না।
২. বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির অনুপস্থিতিঃ
জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারন গুলির মধ্যে অন্যতম আরেকটি কারন হল এই সংঘে পৃথিবীর বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির অনুপস্থিতি। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি শক্তিশালী রাষ্ট্র লিগে যোগদান করেনি। জাতিসংঘের উদ্যোক্তা আমেরিকা সেই লিগের সদস্য ছিল না। তাছাড়া জার্মানি ও রাশিয়াকে প্রথমে লিগের সদস্যপদ দেওয়া হয়নি। ফলে লিগ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে তেমন শক্তিশালী ছিল না।
৩. নিজস্ব সেনাবাহিনী না থাকাঃ
লিগের নিজের কোনো সেনাবাহিনী ছিল না যার জন্যও কিন্তু শেষমেশ লিগকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হতে হয়েছিল। লিগের কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকরী করতে সেনাবাহিনী দরকার হলে সদস্য রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে হত। ঠিকমতো সেনাও পাওয়া যেত না। কারন সদস্য রাষ্ট্রের সেনা সরবরাহ বাধ্যতামূলক ছিল না।
আরো পড়ুন ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের ভুমিকা বা অবদান লেখ
৪. একনায়কতন্ত্রের উত্থানঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি, ইতালি, স্পেনে একনায়কতন্ত্রের আবির্ভাব হয়। নতুন এই সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের শায়েস্তা করার ক্ষমতাও লিগের ছিল না।
৫. তোষণ নীতিঃ
জার্মানি ইতালি জাপানের প্রতি ইংল্যান্ড – ফ্রান্সের তোষণনীতি লিগকে পতনের দিকে ঠেলে দেয়। লিগ প্রথম থেকেই যদি এই রাষ্ট্রগুলির প্রতি সচেতন থাকত তাহলে ওরা এতটা বাড়তে পারত না।
মূল্যায়নঃ যদিও জাতিসংঘ শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তবুও বিশ্ব ইতিহাসে এর প্রভাবকে আমারা কখনো অস্বীকার করতে পারিনা। ব্যর্থতা সত্ত্বেও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সফলতা অর্জন করেছিল।
আরো পড়ুন উগ্রজাতীয়তাবাদ বনাম আন্তর্জাতিকতাবাদ নবমশ্রেণী
আরো পড়ুন ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন গুলি কী ছিল?
*****অবশেষে আপাঙ্কে/তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারন এর এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য। এভাবেই চিরকাল www.artsschool.in ব্লগের পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে আমারা ভবিষ্যতে জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারন এর মতো আরো উন্নত মানের Notes তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।
এই Notes টি নিয়ে তোমাদের যদি কোনো জিজ্ঞাসা বা অভিযোগ থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন এই ঠিকানায় – [email protected]