জোট নিরপেক্ষ নীতির উদ্দেশ্য; আজকের আমাদের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হল দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সিলেবাস এর অন্তর্গত ঠান্ডা লড়াইঃ জোট নিরপেক্ষ নীতি, উপসাগরীয় সংকট অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর তোমাদের আগামী পরীক্ষার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হয়ে উঠবে। তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক আজকের প্রশ্ন এবং তার উত্তরটিঃ
জোট নিরপেক্ষ নীতি কি? জোট নিরপেক্ষ নীতির উদ্দেশ্য আলোচনা করো?
জোট-নিরপেক্ষ বলতে সাধারণভাবে বোঝায় যে দেশ বা যারা জোটের বাইরে. জোট নিরপেক্ষতা কে বুঝতে গেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিকে জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে মহাশক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা ও সোভিয়েত রাশিয়ার আবির্ভাব ঘটেছিল। এই দুই দেশকে কেন্দ্র করে দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তি জোট গড়ে উঠেছিল।
এই দুটির মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিণতিতে উচ্ছেদ হয়েছিল উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ। উপনিবেশবাদের বেড়াজাল ছিন্ন করে আফ্রিকা ও এশিয়ার উপনিবেশ একে একে স্বাধীন হতে শুরু করেছিল। এইসব নবগঠিত স্বাধীন দেশ তখনকার আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বিচারে বেকায়দায় পড়েছিল। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলো কোন কোন শক্তি জোটের সঙ্গে যুক্ত হলেও অনেকের মধ্যে এই ব্যাপারে অনীহা দেখা দিয়েছিল। তারা দুটি শক্তি জোট থেকে দূরত্ব বজায় রেখে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনার নীতি গ্রহণ করে তা জোট নিরপেক্ষ নীতি নামে পরিচিত।
জোট নিরপেক্ষ নীতির উদ্দেশ্যঃ
জোট নিরপেক্ষতা কে একটি আন্দোলন বলা হয়ে থাকে। কারণ নিরপেক্ষ দেশগুলির মিলিত হয়ে বিশ্ববাসীর উপকারের কাজ করে চলেছে। বাস্তবিকপক্ষে বিশ্ব শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রচেষ্টা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। জোট নিরপেক্ষ নীতির উদ্দেশ্য গুলি হল –
১) বিশ্বের উত্তেজনাকে কমিয়ে এনে বিশ্বশান্তির পথকে প্রশস্ত করা।
২) মানবাধিকারের উন্নতি ঘটানো।
৩) পরিবেশের বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করা।
৪) মুক্তিকামী জাতি গুলিকে স্বাধীনতা আইনে উৎসাহিত করা।
৫) আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে ন্যায় এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করা।
৬) বর্ণ বৈষম্য নীতির বিরোধিতা করা।
৭) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান কে উৎসাহিত করা এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক বিরোধের মীমাংসা কে উৎসাহিত করা।
৮) জাতিপুঞ্জো কে শক্তিশালী করা যাতে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
জোট নিরপেক্ষ নীতি বলতে বোঝায় সাধারণত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে সৃষ্টি হওয়া বিশ্বের দুটি জোটে যে দেশ গুলি যুক্ত না হয়, নিজেরা স্বাধীনভাবে থাকতে চেয়েছিল এবং বিশ্ব শান্তির উদ্দেশ্যে কাজ করে গিয়েছিল তাদের দ্বারা গৃহীত নীতিকেই সাধারণ ভাষায় জোট নিরপেক্ষ নীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। যার ফলে বিশ্বশান্তি অনেকাংশে সুদুরপ্রসারী হয়েছিল একথা কখনোই অনস্বিকার্য নয় যে, একমাত্র জোট নিরপেক্ষ নীতির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই জাতিপুঞ্জ হয়ে উঠেছিল আরও শক্তিশালী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল। তাই একথা বলাই যায় যে জোট নিরপেক্ষ নীতির উদ্দেশ্য গুলি সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরো পড়ুন মর্লেমিন্টো সংস্কার আইনের শর্তাবলি কি ছিল? এই আইনের ত্রুটি গুলি সম্পর্কে যা জানো বিষদে আলোচনা করো।
বিঃ দ্রঃ জোট নিরপেক্ষ নীতির উদ্দেশ্য; আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু পাঠ্যবইয়ের সহায়তা নিতে হয়েছে, যদিও যার জন্য কোন প্রকাশকের কাছ থেকে আমাদের লিখিত অনুমতি গ্রহণ করা হয়নি। তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের যদি কারো কোন রকম সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে আমাদের ইমেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যা দূরীকরণে। আর এভাবেই আমাদের এই ব্লগ https://artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিও যাতে ভবিষ্যতে আরো এরকম প্রয়োজনীয় নোটগুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি। ধন্যবাদ।