Menu

তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে

তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে’ – কোন কথার প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য? জলেই লজ্জা এবং গর্ব – বিষয়টি বুঝিয়ে দাও?

 

উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি মতি নন্দীর লেখা কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। এর বক্তা হলেন উপন্যাসের প্রাণপুরুষ তথা কোনির ট্রেনার ক্ষিতীশ সিংহ।

কোনিকে একজন যথার্থ সাতারু তৈরি করতে ক্ষিতীশ নানারকম ত্যাগ স্বীকার ও অপমান সহ্য করেছে। ওপর দিকে, কোনিকেও ক্ষিতীশের স্বপ্ন- পূরণের জন্য ভয়ানক কষ্টকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এগোতে হয়েছে। ধীরেন ঘোষ, বদু চাটুজ্জে, অমিয়া, হরিচরণ – এসব হীন প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন উপায়ে বাহ্যিক ও মানসিক আঘাত করে ক্ষিতীশ এবং কোনির মনোবল আর স্বপ্ন ভেঙে দিতে চেয়েছে। এরকম কতগুলি দৃষ্টান্ত হল –

১. কোনিকে ক্লাবে ভর্তি করতে বাধা সৃষ্টি করে।
২. প্রতিযোগিতায় তাকে নীতিহীন ভাবে ডিসকোয়ালিফাই করে।
৩. প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও তাকে দ্বিতীয় বলে ঘোষণা করে।

তবে এ সবই ছিল বাহ্যিক আঘাত। এগুলো সহ্য করা তবুও সম্ভব। কিন্তু তাদের আঘাতের দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটি ছিল মারাত্মক কারণ মানসিক আঘাতে তারা ক্ষিতীশ আর কোনিকে বিদ্ধস্ত করতে চেয়েছিল। এরকম কয়েকটি ঘটনা হল –

১. যেখানে সেখানে ব্যাঙ্গাত্মক বাক্যবাণে তারা কোনি আর ক্ষিতীশকে জর্জরিত করতো।

২. অমিয়া ক্ষিতীশের স্ত্রীর দোকানে জামা বানাতে এসে সকলের সামনে কোনিকে ‘কাজের ঝি’ বলে উল্লেখ করেছিল। উদ্ধত দাম্ভিক অমিয়ার এই আচরনে কোনি যেমন লজ্জিত হয়েছিল, তেমনি হয়েছিল বিব্রত। আর একথা জানতে পেরেই কোনিকে উদ্দেশ্য করে ক্ষিতীশ তাকে বিলেছিল তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে – অর্থাৎ তাকে সাঁতার টাকে ভালো করে তাদের সকলকে দেখিয়ে দিতে হবে সেও কোনো অংশে কম নয়।

অমিয়ার ব্যঙ্গোক্তিতে কোনি অপমানিত হয়। লজ্জিত বোধ করে। ক্ষিতীশ তার মানসিক অনুভূতির দোসর হয়েও নিজের উপলব্ধি কোনির সামনে ব্যাখ্যা করে। সে তাকে বলে – তথাকথিত যে সমস্ত সামাজিক আঘাত ব্যক্তির মনে যন্ত্রণা সৃষ্টি করে, মানুষ হিসেবে যা নিজেকে নিজের কাছে লাঞ্ছিত করে – তাকে নিজের প্রত্যয়ী সাধনার দ্বারা জয় করতে হয়। সেই সাধনার জন্য তৈরি করতে হয় দৃঢ় মন। নিজেকে পৌঁছে দিতে হয় সক্ষমতার শীর্ষে। তারপর সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয়। তখন সেই সিদ্ধি শুধু নিজের সন্মান বাড়ায় না, জাতীয় সন্মানের ক্ষেত্র নির্মাণ করে।

আসলে ক্ষিতীশের বক্তব্যের মূল সুরটাই ছিল এই, কোনি একজন সাতারু। তার একমাত্র পরিচয় সে সাতারু। মানুষ হিসেবে এই পরিচয়েই সে শ্রেষ্ঠ। সুতরাং তার শ্রেষ্ঠত্ব তার সক্ষমতা তার মান সন্মান রক্ষার একমাত্র মাধ্যম হলো জল। সাতারু হিসেবে সেই জলেই প্রমানিত হবে তার সাধনার জোর। সেখানেই নির্ধারিত হতে পারে তার লজ্জা ও গর্ব। সত্য মানুষ হিসাবে আপন কর্তব্যের প্রতি এমন নিবেদিত প্রান হলেই সে হয়ে উঠতে পারে ইতিহাসের একজন সঞ্চালক। আর এক একটা রেকর্ড ভাঙার মধ্য দিয়ে সে দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আত্মবিশ্বাসকে বলিষ্ঠ করে তুলতে পারে। সুতরাং জলে সাতারু হিসেবে তার ব্যর্থতা মানে লজ্জা, আবার জলে তার সাফল্যেই জরিয়ে আছে তার এবং জাতির গর্ব।

 

আরো পড়ুন বহুরূপী গল্পের উৎস বিষয় সংক্ষেপ সম্পর্কে বিষদে পড়ুন

 

অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে WBBSE board এর দশম শ্রেণী বা মাধ্যমিক সিলেবাসের অন্তর্গত তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে এর এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য, আর এভাবেই আর্টস স্কুল ডট ইন এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা আরো গুরুত্বপূর্ণ নোটস গুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।

 

বিঃদ্রঃ তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে এর এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে কিছু শিক্ষক এর পরামর্শে এবং তার সাথে কিছু বইয়ের ও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাই এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!