Menu

দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল প্রশ্ন উত্তর মান ৩

দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল; আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় হল WBBSE Board এর দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল যা কিনা মাধ্যমিকের wbbse নির্দেশিত ভূগোল বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়। তাহলেই এখানে আমাদের প্রথমেই জানতে হয়ে বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?

বায়ুমণ্ডল হল পৃথিবীর উপরি স্তরে যে বিভিন্ন গ্যাস ধূলিকণা এবং অন্যান্য স্তরের আস্তরণ পৃথিবীকে চাদরের মতো ঘিরে রয়েছে। এখানে মানে বায়ুমণ্ডলে আমারা দেখতে পাবো বিভিন্ন গ্যাস, জলিয়বাস্প, ধূলিকণা প্রভৃতি।

কিন্তু প্রতি বারের মতো এবারও তোমাদের কাছে একটিই অনুরোধ দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল এর এই আর্টিকেলটি পড়ার আগে একটু ভালো করে তোমাদের বই অর্থাৎ দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল অধ্যায়টি ভালো করে পড়ে নিও যাতে প্রত্যেকটি প্রশ্ন ও উত্তর খুব সহজেই বুঝে নিতে পারো।

দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল
দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল

তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল অধ্যায়ের কিছু সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর যার মান ৩ প্রতিটি প্রশ্নের জন্য

 

১. ওজোন স্তরের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ বায়ুমণ্ডলের ওজোন গ্যাসের পরিমাণ অতি সামান্য হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। ট্রপোপজের উপরে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে এর উদ্ধাংশে ২০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার উচ্চতায় ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব অধিক বলে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে এর এই অংশেকে ওজোন স্তর বলে। ওজোন স্তর পৃথিবীতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল-

ক) ওজোন স্তর সূর্য থেকে আসা অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে জীবকুলকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

খ) ওজোন স্তর সূর্যরশ্মির কিছু অংশ শোষণ করে বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ বৃদ্ধি করে।

গ) বর্তমানে হিমকরন প্রভৃতির ফলে উৎপন্ন ক্লোরোফ্লুরো কার্বন গ্যাস ওজোন স্তর ক্ষয় করে চলেছে। ফলে মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে।

২. বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার কারন কি?

উত্তরঃ ভূগর্ভস্ত তাপ, আগ্নেয়গিরি ও উষ্ণ প্রস্রবণের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশে গেলেও এবং ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, রেডিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণের জন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে সামান্য তাপ নির্গত হলেও বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার জন্য এই তাপের বিশেষ কোনো অবদান নেই। বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার প্রধান উৎস হল সূর্য। সূর্য থেকে পৃথিবী প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকলেও পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল প্রধানত সূর্যের  তাপেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে উত্তপ্ত হয়।

দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল
দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল

৩) বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরে ছিদ্র (ওজোন হোল) হলে কী ঘটতে পারে বলে তুমি মনে করো তা নিজের ভাষায় লেখ।

উত্তরঃ বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের মধ্যে যে ওজোন গ্যাসের স্তর রয়েছে তা সূর্য থেকে বিচ্ছুরিত অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে নেয় বলে এই স্তরের উপস্থিতির জন্য সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারে না, যার ফলে সমগ্র প্রাণিজগৎ সূর্যের এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়।

বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরে ছিদ্র হলে ওই ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে সূর্যরশ্মির ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে যার ফলে প্রাণীদেহে মারাত্মক ক্ষতিকারক প্রভাবের সৃষ্টি হবে। ফলে প্রাণীদেহে চামড়ার ক্যানসার, চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যাওয়া, প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার নানা ধরণের চর্মরোগ দেখা দেবে।

আরো পড়ুন একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর প্রথম অধ্যায়

৪) আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।

উত্তরঃ আবহাওয়া  ও জলবায়ুর পার্থক্য নীচে সারণির সাহায্যে দেখানো হল-

আবহাওয়া জলবায়ু
ক) কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট সময়ে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের অবস্থাকে আবহাওয়া বলে। ক) বিস্তীর্ণ অঞ্চলব্যাপী অভাওয়ার ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মানে দীর্ঘকালীন গড় অবস্থাকে জলবায়ু বলা হয়।
খ) অবহাওয়া সর্বদা পরিবর্তনশীল। অবহাওয়া প্রতিদিন, প্রতিঘন্টায়, এমনকি প্রতি মিনিতে সহজেই পরিবর্তিত হতে পারে। খ) জলবায়ুর স্থায়িত্ব দীর্ঘকালীন। জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য ঋতুভেদে পরিবর্তনশীল।
গ) আবহাওয়া শুধুমাত্র স্বল্প পরিসর স্থানের সাময়িক অবস্থাকে সূচিত করে। গ) জলবায়ু কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলের গড় অবস্থাকে সূচিত করে।

 

আরো পড়ুন সংস্কার বৈশিষ্ট ও পর্যালোচনা দশম শ্রেণী ছোট প্রশ্ন ও উত্তর।

৪) মেঘাচ্ছন্ন রাতের তুলনায় মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল হয় কেন?

উত্তরঃ আকাশে মেঘের আবরণ ভূপৃষ্ঠে কম্বলের মতো কাজ করে। কম্বল যেমন বাইরের বাতাস ভেতরে ঢুকতে এবং ভেতরের বাতাস বাইরে বের হতে দেয়না, তেমনি মেঘের আবরণ দিনের বেলা সূর্যরশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে বাঁধা দেয় এবং রাতিবেলা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে অর্থাৎ পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে পৌঁছাতে দেয় না।

যার ফলে, আকাশে মেঘের আবরণ থাকলে দিনের বেলা উত্তাপ কমে এবং রাত্রিবেলা উত্তাপ বাড়ে। কিন্তু রত্রিবেলা আকাশ যদি মেঘমুক্ত হয় তাহলে বিকিরণের অসুবিধা হয়না বলে ভূপৃষ্ঠ দ্রুত তাপ বিকিরন করে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। এর ফলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তর ও শীতল হয়। এজন্যই মেঘাচ্ছন্ন রাত্রির তুলনায় মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল হয়।

আরো পড়ুন উপনিবেশিক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস

৫) মরু অঞ্চলে দিনের বেলা প্রচণ্ড উত্তাপ ও রাত্রিবেলা উত্তাপ কম থাকে কেন?

উত্তরঃ বছরের অধিকাংশ সময় উষ্ণ মরুভূমির আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। ফলে, ৬৬ শতাংশ কার্যকরী সৌরশক্তির প্রায় ১৪ শতাংশ বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত বালুকণা, জলীয়বাষ্প, কার্বন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাস দ্বারা শোষিত হলেও বাকি ৫১ শতাংশ কার্যকরী সৌরশক্তি ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত করে।

বালুকাময় মরুভূমির প্রধান উপাদান হল কোয়ার্টজ জাতীয় খনিজ। এই খনিজগুলির তাপ শোষণ ক্ষমতা যেমন বেশি, তেমনি এর তাপ বিকিরণ ক্ষমতাও বেশি।

মরুভূমির বালুকাময় মৃত্তিকা সরাসরি সূর্যতাপ শোষণ ও বিকিরণ ঘটিয়ে বায়ুমণ্ডলেকে দ্রুত উত্তপ্ত করে তোলে। আবার রাত্রিবেলায় আকাশ মেঘমুক্ত হওয়ায় দ্রুত বিকিরণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলীয় তাপ মহাশূন্যে ফিরিয়ে দেয়। ফলে রাত্রিবেলা ভীষণ শীতল হয়ে পরে। ম্রু অঞ্চলের এরকম ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্টের  জন্য মরু অঞ্চলে দিনের বেলা প্রচণ্ড উত্তাপ থাকে কিন্তু রাত্রিবেলা ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু দ্রুত তাপ হারিয়ে শীতল হয়ে পড়ে।

আরো পড়ুন নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ নবম শ্রেণী

৬. ক্রান্তীয় উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ মরুভূমির সৃষ্টির কারন কী?

উত্তরঃ আফ্রিকার সাহারা ও কালাহারি দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা ভারত-পাকিস্তানের থর, উত্তর আমেরিকার সোনেরান, আরবের মরুভূমি প্রভৃতি পৃথিবী বিখ্যাত উষ্ণ মরুভূমি গুলি ক্রান্তীয় উপক্রান্তীয় অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে। এর কারন হল এই অঞ্চলগুলি উপক্রান্তীয় বা কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়ের অন্তর্গত।

যেহেতু এইসব অঞ্চলে বায়ু ওপর থেকে নীচে নামে, সেকারনে উষ্ণতা ও জলীয় বাষ্প ত্যাগ করার পরিবর্তে বায়ুর এগুলি গ্রহন করার ও ধারন করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এইজন্য এইসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বিশেষ হয় না। উষ্ণমণ্ডলে অবস্থিত এবং বৃষ্টিহীন হওয়ায় এইসব অঞ্চলে বিস্তৃত উষ্ণ মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।

আরো পড়ুন গ্রহরুপে পৃথিবী ছোট প্রশ্ন ও উত্তর class 9 2021

 

 

অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল এর এই পোস্টটি পড়ার জন্য। এভাবেই চিরদিন https://artsschool.in এর এই ব্লগের পাশে থাকুন যাতে ভবিষ্যতে দশমশ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল এর মতো  আরো উন্নত মানের Study material & Notes আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারি। একটাই অনুরোধ করবো নিয়মিত আমাদের এই ব্লগে Visit করুন এবং নিজের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলুন।

 

বিঃ দ্রঃ এই আর্টিকেলের দশম শ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল এর পুরো প্রশ্ন ও উত্তর গুলি কিছু অভিজ্ঞ শিক্ষক ও পাঠ্য বই বা নোট বইয়ের সাহায্যে এবং নিজের চেষ্টায় তৈরি। শিক্ষকদের অনুমতি নেওয়া হলেও প্রকাশকদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়ে ওঠেনি। এবিষয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো অসুবিধা থাকে তবে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে এবং জানান আপনার কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!