দাদাঠাকুরের স্বরূপ; আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ শিক্ষা পরিষদের অন্তর্গত একাদশ শ্রেণির বাংলা সিলেবাস এর গুরু নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর; যেটি হল – উনি গেলে অচলায়তনের পাথর শুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে, পুঁথি গুলোর মধ্যে বাঁশি বাজবে – বক্তা কে? উনি বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। যা তোমাদের আগামী একাদশ শ্রেণির বার্ষিক বাংলা পরীক্ষার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ; চলো তাহলে দেখে নেওয়া যাক আজকের প্রশ্ন উত্তরটিঃ
একাদশ শ্রেণী – বাংলা
গুরু নাটক – দাদাঠাকুরের স্বরূপ
প্রশ্নঃ উনি গেলে অচলায়তনের পাথর শুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে, পুঁথি গুলোর মধ্যে বাঁশি বাজবে – বক্তা কে? উনি বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ গুরু নাটকের দ্বিতীয় দৃশ্য প্রথম যূনক, পঞ্চকে এ কথা বলেছেন।
এখানে উনি বলতে যুনকদের গুরু দাদা ঠাকুর এর কথা বলা হয়েছে।
দাদাঠাকুরের স্বরূপঃ
দাদা ঠাকুর যুনকদের গুরু। প্রাণচঞ্চল, বিরামহীন, কর্মউদ্যোগী যুনকদের এই গুরু তাদের খেলার সাথী, গুরু গুরুভার মহাত্ম্য তারা বোঝে না। তারা কি জানেনা, কেবল ঐ ছুটে ছুটে বেড়ায়। এদিকে পঞ্চক অচলায়তনের অচল পরিবেশে মুক্ত সচলতার প্রতীক। অচলায়তনের চির স্থবির নিগড় ছিড়ে সে মাঝে মাঝে যুনকদের কাছে আসে, তাদের খেলার সাথী হয় , আর সেই খেলায় দাদা ঠাকুরের সঙ্গে তার প্রাণের মেলামেশা শুরু হয়। যুনকরা যেহেতু শাস্ত্রীয় নিয়মের কোন ধার ধারে না, যেহেতু তারা কর্মবাদী, কর্মই তাদের প্রাণের ধর্ম। দাদা ঠাকুর তাই তাদের সেই কর্ম প্রেরণার কান্ডারী হয়ে ওঠে।
কিন্তু অচলায়তন যুগ যুগ ধরে অচল অবস্থার সাধনা করে চলেছে। প্রশ্নহীন আনুগত্যই তাদের পাথেয় এবং গন্তব্য। সেখানকার দাম্ভিক প্রশাসকরা এই নিয়ম বদ্ধ অচলতাকেই গুরুর আকাঙ্ক্ষিত বলে মান্যতা দেয় এবং প্রচার করে। তারা কর্মবিমুখ, অলস এবং স্থবির। শাস্ত্র নির্দেশ প্রতিপালনে তারা শাস্ত্রেরও অধিক। আচারবাদী ব্রত পালনই তাদের জীবিতকালীন জীবন সম্পদ। ফলে অচলায়তন হয়ে পড়ে প্রাণহীন, শুষ্ক, কঠোর যান্ত্রিকতার চূড়ান্ত রূপ।
কর্মমুখী ও প্রানস্পন্দিত জীবনী শক্তির অধিকারী যুনকরা তাই মনে করে, তাদের আনন্দময় দাদা ঠাকুর যদি যন্ত্রময় অচলায়তনের পাথর রাজ্যে পৌঁছে যান, তাহলে অচলায়তনের সমস্ত মরা প্রাণে দিগন্ত প্লাবিত জোয়ার আসবে। স্বাভাবিক স্বভাবের উচ্ছলতায় জেগে উঠবে চিরন্তন শিক্ষার্থীর মন। জ্ঞানমার্গের কঠিন মাটিতে এসে আছড়ে পড়বে কর্মের স্বতস্ফূর্ত ঢেউ। তাই দাদা ঠাকুরের কর্মের আদর্শে যখন অজ্ঞ, অন্তঃসারশূন্য জ্ঞানতত্ত্বে মেতে উঠবে, তখনই রিক্ততার বক্ষ ভেদ করে দেখা দেবে প্রকৃতির প্রাণোচ্ছল ছন্দ নির্বাধ নির্মল বিমুক্ত জীবন আনন্দ। আর এই প্রসঙ্গে প্রথম যূনক পঞ্চককে, দাদা ঠাকুরের স্বরূপ উপলব্ধি করানোর আগ্রহে এই কথা বলেছে।
আরো পড়ুন – গুরু নাটকের কৌতুক রস সম্পর্কে আলোচনা করো।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটিকে PDF আকারে পেতে নীচে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করুন –
বিঃদ্রঃ আমাদের আজকের দাদাঠাকুরের স্বরূপ এর এই উনি গেলে অচলায়তনের পাথর শুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে, পুঁথি গুলোর মধ্যে বাঁশি বাজবে – বক্তা কে? উনি বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। প্রশ্নটির উত্তর তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু বইয়েরও সাহায্য নিতে হয়েছে; যদিও এর জন্য আমাদের তরফ থেকে কোনো প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি; তাই আমাদের এই দাদাঠাকুরের স্বরূপ আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো কোন রকম সমস্যা হয়ে থাকলে আমাদের ইমেইল করুন আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যা দূরীকরণে।