পাঠক্রম গঠনের উপাদান; আজকের আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা পাঠক্রমের সংজ্ঞা দাও? পাঠক্রম গঠনের উপাদান গুলি সন্মন্ধে আলোচনা করবো যা তোমাদের আগামী একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান (Education) এর বার্ষিক পরীক্ষার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
পাঠক্রমের সংজ্ঞা দাও? পাঠক্রম গঠনের উপাদান গুলি সন্মন্ধে আলোচনা করো। (২+৬)
উত্তরঃ পাঠক্রমের সংজ্ঞাঃ
পাঠক্রম বলতে শিক্ষার্থীদের সমস্তরকমের অভিজ্ঞতাকে বোঝায় যা তারা শ্রেণীকক্ষে, কর্মশালায়, খেলারমাঠে এবং শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে লাভ করে। এই অর্থে সমগ্র বিদ্যালয় জীবনই হল পাঠক্রম, যা শিক্ষার্থীর জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রেই স্পর্শ করে এবং তার সুসংহত ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলে।
পাঠক্রম গঠনের উপাদানঃ
পাঠক্রম গঠনের উপাদান বলতে বোঝায় সেইসব বিষয় যা পাঠক্রম রচনার ক্ষেত্রে বিবেচিত হয়। পাঠক্রম গঠনের উপাদানগুলি হল – ১) বিষয়বস্তুর প্রকৃতি, ২) শিশুর বিকাশ, ৩) সামাজিক বিষয়, ৪) আর্থিক বিষয়, ৫) পরিবেশগত বিষয়, ৬) প্রতিষ্ঠানিক বিষয় ও ৭) শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়।
পাঠক্রম গঠনের উপাদান গুলি নিম্নে আলোচনা করা হল-
1. বিষয়বস্তুর প্রকৃতিঃ
পাঠক্রমে সাহিত্য, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, গনিত ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রতিটি বিষয়ের নিজস্ব গঠন ও বৈশিষ্ট আছে। পাঠক্রম রচয়িতাদের বিষয়গুলির গঠন, প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট সম্পর্কে যথাযত ও বিষদ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
2. শিশুর বিকাশঃ
যখন শিক্ষণীয় বিষয় অভিজ্ঞতা ও কর্মসূচি পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তখন শিক্ষার্থীর বৃদ্ধি ও বিকাশমূলক তথ্যের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার কোন স্তরের জন্য পাঠক্রম রচনা করা হচ্ছে সেই স্তরের শিক্ষার্থীদের পরিনমনের স্তর কীরকম, তাদের ক্ষমতা, সামর্থ বা আগ্রহের প্রকৃতি কী – সে সম্পর্কে বিষদ তথ্য সংগ্রহ করা একান্ত প্রয়োজন।
3. সামাজিক বিষয়ঃ
সমাজ তার প্রয়োজনেই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করেছে। সমাজের মধ্যেই শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকরী হয়। সামাজিক ব্যক্তি সমূহ শিক্ষার লক্ষ নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করে। এই লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যই পাঠক্রম প্রস্তুত করা হয়। সেই জন্য পাঠক্রম প্রণয়নের সময়েই শিক্ষাব্যবস্থার ওপর যে সমস্ত সামাজিক শক্তি সমূহ ক্রিয়াশীল থাকে তাদের সম্পর্কে শিক্ষাজ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন।
4. আর্থিক বিষয়ঃ
পাঠক্রমের ব্যবহারযোগ্যতা বিচারে আর্থিক বিষয়ের গুরুত্ব যথেষ্ঠ বেশি। পাঠক্রমের কার্যকারিতা বিভিন্ন শর্তের ওপর নির্ভরশীল। যেমন- অনুকূল পরিবেশ, শিক্ষা উপকরণের যথেষ্ট সরবরাহ, যোগ্য ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ইত্যাদি। এই সমস্ত শর্ত পূরণের জন্য যথেষ্ট অর্থের প্রয়োজন।
5. পরিবেশগত বিষয়ঃ
এখানে পরিবেশ বলতে বোঝায় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কমিউনিটির প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ, মানবজাতির অস্তিত্ব ও সভ্যতার বিকাশ নির্ভর করে শুষ্ঠ পরিকল্পনা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সম্পদের ব্যবহারের ওপরে। উন্নতবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমরা অভূতপূর্ব উন্নতি করেছি। তাই পরিবেশগত বিষয় পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
6. প্রতিষ্ঠানিক বিষয়ঃ
প্রতিষ্ঠান সমাজের একটি উপব্যবস্থা। সমাজ তার বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেয়। পাঠক্রম রচনার ক্ষেত্রে তাই প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি বিশেষ করে তার কার্যকরী দিকের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
7. শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ঃ
শিক্ষক পাঠ দানের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পাঠক্রম সঞ্চালন করেন। তার কর্তব্য হল পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ধরণের কাজ ও অভিজ্ঞতার ব্যাখ্যা করা, নিদর্শন দেওয়া এবং তাৎপর্য নির্ণয় করা। সুতরাং পাঠক্রম রচিয়তাগন যখন পাঠক্রম রচনা করেন তখন শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়গুলির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুন গতানুগতিক পাঠক্রম ও আধুনিক পাঠক্রমের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
অবশেষে আপানাকে / তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে পাঠক্রম গঠনের উপাদান গুলির এই পুরো আর্টিকেলটি সময় করে পড়ার জন্য, যা তোমাদের আগামী একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান (Education) পরীক্ষার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এভাবেই চিরকাল www.artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা পাঠক্রম গঠনের উপাদান এর মতো তোমাদের পাঠক্রমের সহযোগী আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।
বিঃদ্রঃ পাঠক্রম গঠনের উপাদান এর এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে কিছু শিক্ষকের পরামর্শ মেনে তার সাথে সাথে আমাদের কিছু পাঠ্য বইয়েরও সাহায্য নিতে হয়েছে। তাই পাঠক্রম গঠনের উপাদান এর এই আর্টিকেলটি নিয়ে তোমাদের / আপনাদের কারো যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।