Menu

বাংলা সংগীতের ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর history Sec 4Th Sem

বাংলা সংগীতের ইতিহাস; আজকের এই আর্টিকেলটিতে তোমরা পাবে কল্যাণী ইউনিভার্সিটি(Kalyani University)  এর 3-year Degree Course এর দ্বিতীয় বর্ষের চতুর্থ সেমিস্টারের ইতিহাস অর্থাৎ History SEC বিষয়ের প্রথম অধ্যায় তথা বাংলা সংগীতের ইতিহাস এর গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলি যা তোমাদের আগামী সেমিস্টার পরিক্ষার জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ; তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক আজকের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলি –

বাংলা সংগীতের ইতিহাস (১৩শ – ১৪শ শতকের বৈষ্ণব কবিতার প্রভাব); হিন্দু এবং ইসলামী ধারার মিশ্রণ;  নবাব,  জমিদার এবং বারো ভূঁইয়াদের পৃষ্ঠপোষকতা।

সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্ন –                               প্রতিটি প্রশ্নের মান

প্রাচীনকালে ভারতীয় সংগীতের ধারার পরিবর্তন কিভাবে সংঘটিত হয়?

উত্তরঃ  ভারতীয় সংগীতের ধারাটি ভারতের ইতিহাসের বিস্তীর্ণ পরিসরে বিকীর্ণ হয়ে আছে।  ভারতীয় সভ্যতার বিকাশ ঘটে দ্রাবিড় ও আর্যদের সংঘাত ও সম্মেলনের মাধ্যমে।  এ যুগের সঙ্গীতের একটা সুষ্ঠু রূপ পাওয়া যায়।  দ্রাবিড় সভ্যতার ধর্মীয় সংগীত থেকে এ যুগে ত্রিস্তর বিশিষ্ট সাম গান সৃষ্টি হয়।  এগুলি ছিল প্রার্থনার স্তোত্র ধ্বনি বা সংগীত যা থেকে ভারতীয় সংগীতের উৎপত্তি বলে তাত্ত্বিকেরা মনে করেন।  ক্রমবিকাশের পথ অনুসরণ করে এই  স্তোত্রধ্বনি  ক্রমশ হয়ে ওঠে আরম্বরপূর্ণ,  অলংকার বহুল এবং বৈদিক যুগের অভিজাত গান হিসাবে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ।

অপরদিকে আদিম সামাজিক গান থেকে উদ্ভূত লৌকিক গানের সুর কাঠামোর পরিবর্তন ঘটে,  যা থেকে পরবর্তীকালে সৃষ্টি হয় বিচিত্র  লোকগান।  আবার সামগানের  সাংগিতিক  ঐতিহ্য থেকে রূপ নেয় গান্ধর্ব সংগীত।  পরবর্তী সময়ে এই গানে লৌকিক দেশী বা আঞ্চলিক গানের কিছু সংমিশ্রণ ঘটেছিল।  তবে এর সংগীত ছিল নিয়মাবদ্ধ অভিজাত সংগীত এবং মন্দির আশ্রিত।

. গান্ধর্ব  সংগীত কবে এবং কিভাবে অবলুপ্ত হয়কিভাবে তা পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তরঃ  বৌদ্ধ যুগে দেখা যায় ব্রাহ্মণ্য ঐতিহ্যবাহী  গান্ধর্ব সংগীতের ধীরে ধীরে অবলুপ্তি ঘটতে থাকে এবং লৌকিক গান প্রাধান্য পায়।  বেদ বিরোধী ব্রাহ্মণ বিরোধী এবং সংস্কৃত ভাষা বিরোধী বৌদ্ধরা  দেশীয় ভাষা কৃষ্টি কে সম্মান জানিয়ে এর বিকাশ সাধনে প্রবাসী হন।  আঞ্চলিক সংগীত শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে  বেশি রাগ হিসাবে বিকশিত হয়।

বৌদ্ধ যুগের প্রাধান স্থিমিত হয়ে এলে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রাধান্য পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়।  এই সময় প্রাধান্য পায় মার্গ সংগীত।  ধীরে ধীরে গান্ধর্ব  সংগীতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে মার্গসংগীত ও গান্ধর্ব সংগীত সমার্থক হয়ে পড়ে।

. প্রবন্ধ কাকে বলে?

উত্তরঃ সুপ্রাচীন কালের সঙ্গীতের ভীতের ওপর কালক্রমে নতুন সাজে, নতুন রূপে বর্তমান সংগীতের প্রতিষ্ঠা। এই নতুনত্ব আনয়নের ক্ষেত্রে ঘটে চলেছে অনেক গ্রহণ বর্জন যার পেছনে প্রধান ভূমিকা রয়েছে মুসলমান ও পাশ্চাত্য সংগীত ধারার। খ্রিস্টপূর্বাব্দ যুগ থেকে খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত বাংলায় প্রচলিত রাগ মিশ্রিত গানকে বলা হত  প্রবন্ধ।  এগুলির কোন নির্দিষ্ট শৈলী বা ফর্ম ছিল না তবে এগুলি নিয়মাবদ্ধ ছিল এবং বিভিন্ন ধরনের গানের শৈলীর একত্রীকরণ ঘটেছিল এর মধ্যে।

বাংলা ভাষায় সংগীত রচনা কবে কিভাবে শুরু হয়অথবা  বাংলা সংগীতের আদি যুগ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ  খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দী থেকে বাংলা সাহিত্যের সূচনা এবং দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের আদি যুগ বিস্তৃত।  এই আদি যুগে বাংলা ভাষার রচিত সাহিত্য বা সংগীতের একমাত্র প্রাথমিক বা প্রামানিক নিদর্শন হলো চর্যাপদ।  বিপ্রকীর্ণ শ্রেণীর  প্রবন্ধ গীত চর্যাপদ গুলিতে বাংলা গানের মূল নিহিত আছে।  সুতরাং শুধুমাত্র সাহিত্যের প্রথম পদক্ষেপ নয়,  বাংলা সংগীতের শুরু এই চর্যাপদ দিয়েই।  কারণ চর্যাপদ গীতের আকারে লেখা পদের সমষ্টি।  এই সময় কথ্য ভাষা পরিবর্তিত হয়ে প্রাকৃতের রূপ গ্রহণ করল।

এই প্রাকৃত ভাষা কালক্রমে ভেঙে আবার বিভিন্ন প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক ভাষায়,  যেমন- বাংলা,  আসামি, উড়িয়া,  মারাঠি প্রভৃতিতে পরিণত হল।  আধুনিক ভাষায় পরিবর্তিত হওয়ার পূর্বে প্রাকৃতের যে অর্বাচীন রূপ ছিল তার নাম অপভ্রংশ।  সেন রাজাদের পূর্বে বঙ্গভূমিতে এই অপভ্রংশ ভাষায় সাহিত্যচর্চা হতো।  কিন্তু রাজসভা ও পন্ডিত মন্ডলীর মধ্যে এ ভাষার সমাদর ছিল না।  তবে সাধারণ মানুষ এবং বৌদ্ধ সহজপন্থী ও শৈব নাথপন্থী গুরু শিষ্যদের মধ্যে এর সমাদর ছিল।  এরা বাংলা ভাষায় গান লিখতেন এবং এদের গানগুলি বাংলা ভাষার সর্বপ্রথম রচনা।  অর্থাৎ খ্রিস্টীয় দশম দ্বাদশ শতাব্দীতে অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষা জন্মগ্রহণ করে ও বাংলা ভাষায় সংগীত রচনা শুরু হয়।

চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেনকবে তা প্রকাশিত হয়?

উত্তরঃ  ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে নেপালের রাজদরবারের অভিলিপিশালায় চর্যাচর্যাবিনিশ্চয় নামক একটি পুথি আবিষ্কার করেন মহামহোপাধ্যায়  হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়।

চর্যাচর্যা বিনিশ্চয়, সরহপাদের  দোহা, অদ্বয় বজ্রের  সংস্কৃত সজাম্মায়  পঞ্জিকা কৃষ্ণাচার্য বা হানহুপাদের দোহা,  আচার্য পাদের  সংস্কৃত মেখলা নামক টিকা এবং আগেই আবিষ্কৃত  ডাকার্নব  পুঁথি একত্রে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে হাজার বছরের  পুরনো বাঙালা বৌদ্ধগান  ও দোহা শিরোনামে সম্পাদকীয় ভূমিকা সহ প্রকাশ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

Read More: বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন সম্পূর্ণ আলোচনা – Kalyani University 2nd year 4th Semester GE Bengali 1st Chapter

চর্যাপদের মোট কটি পদ আবিষ্কৃত হয়েছিল?

উত্তরঃ  হরপ্রসাদ শাস্ত্রী  চর্যাচর্য বিনিশ্চয়  নামক যে পুঁথি টি সংগ্রহ করেছিলেন তাতে মোট ৪৬ টি পূর্ণাঙ্গ এবং একটি খন্ডিত পদ পাওয়া যায়।  পুঁথি টির মধ্যে কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল।  শ্রী প্রবোধ চন্দ্র বাগচী  মহাশয়  চর্যার যে তিব্বতি অনুবাদ সংগ্রহ করেছিলেন  তাতে আরো চারটি পদের অনুবাদ সহ ওই খন্ডিত পদটিরও অনুবাদ পাওয়া যায়।

মূল পুঁথির পদের সংখ্যা ছিল ৫১।  মূল তিব্বতি অনুবাদের ভিত্তিতে পণ্ডিতগণ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে মূল গ্রন্থটির নাম চর্যা গীতি কোষ এবং এতে ১০০ টি পদ ছিল।  হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুঁথি টি চর্যা গীতি কোষ থেকে নির্বাচিত পুথিসমূহের সমূল টীকাভাষ্য।

. চর্যাপদের পদকর্তা কে ছিলেনচর্যাপদে মোট কতজন পদকর্তা নাম পাওয়া যায়তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করচর্যাপদের পদগুলির রচনার প্রকৃত উদ্দেশ্য কি ছিল?

উত্তরঃ  চর্চাচর্য বিনিশ্চয়  পুঁথিতে যে সকল পদকর্তার নাম পাওয়া গেছে তারা সকলেই বৌদ্ধ সহজিয়া সাধক বা সিদ্ধাচার্য।  এই পুঁথিতে মোট 23 জন সিদ্ধাচার্যের পদ সন্নিবেশিত হয়েছে যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আর্যদেব,  কৃষ্ণাচার্য,  বা কানহুপাদ,  লুইপাদ,  ভুসুক পাদ,  সরহপাদ।

চর্যাপদ প্রাপ্ত পদ বা গানগুলির মাধ্যমে  সিদ্ধাচার্যগণ তাদের শিষ্যদের জন্য সাধনার সংকেত লিপিবদ্ধ করেছেন।  তারা এই গানগুলি কে বলেছেন চর্যা গীতি।  চর্জাগুলিকে প্রধানত তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়-  কতগুলিতে দার্শনিক তথ্য সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে,  কতগুলি তে আছে যোগ ও তান্ত্রিক মতবাদ সম্বন্ধে উল্লেখ এবং কতগুলি তে দেওয়া হয়েছে যোগ ও তন্ত্রের সঙ্গে তত্ত্বালোচনা।

. গীতগোবিন্দ কাব্যের রচয়িতা কেতার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

 উত্তরঃ  গীতগোবিন্দ কাব্যের রচয়িতা হলেন কবি জয়দেব।

গীতগোবিন্দম্ এর ভূমিকা থেকে জানা যায় যে জয়দেবের জন্মস্থান ছিল কেন্দুবিল্ব।  এই কেন্দুবিল্ব  গ্রাম আজও আছে।  বর্ধমান বীরভূম সীমান্তে অজয় নদীর ধারে অতীতের কেন্দুবিল্ব  আজ জয়দেব  কেন্দুলী নামে পরিচিত।  কোভিদ পিতার নাম ভোমদেব।  মাতার নাম বামাদেবী এবং পত্নী ছিলেন পদ্মাবতী। সেকশুভোদয়  এবং ভক্তমাল নামক সংস্কৃত গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে কবি জয়দেব একজন সংগীত বিশেষজ্ঞ ছিলেন।  সেন রাজবংশের পরাক্রমশালী রাজা লক্ষণ সেনের সভাকবি ছিলেন কবি জয়দেব।

বাংলা কীর্তন গানে গীতগোবিন্দের প্রভাব কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তরঃ  গীতগোবিন্দের দুটি প্রধান  গায়ন রূপ প্রচলিত ছিল;  একটি ছিল ধ্রুপাদাঙ্গ এবং অন্যটি কীর্তনাঙ্গ।  তবে গীতগোবিন্দর পদ সকল ধ্রুপদাঙ্গেই পাওয়া হতো।  বাংলায় গীতগোবিন্দর প্রভাব হ্রাস পাবার  পরবর্তী সময়ে শ্রীচৈতন্যের প্রভাবে কীর্তণ আন্দোলন শুরু হয় এবং মহাপ্রভুর অনুসারীরা কীর্তনাঙ্গে জয়দেবের গীতগোবিন্দ কাব্যের পদগুলি গাইতে থাকে।

গীতগোবিন্দর পদগুলি  কীর্তনে পরিণত হয়।  স্বয়ং মহাপ্রভু গীতগোবিন্দর পদগুলি খুবই পছন্দ করতেন।  এভাবেই বাংলা কীর্তন সংগীতে গীতগোবিন্দের গভীর প্রভাব পড়ে।

আরো পড়ুনঃ বাংলা আর ইংরেজি প্রবন্ধের সম্পূর্ণ আলোচনা; কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত প্রথম সেমিস্টারের বাংলা সিলেবাস। 

১০. শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে কিরূপে গীতগোবিন্দের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়?

উত্তরঃ  গীতগোবিন্দ তে যেসব রাগ রাগিনির উল্লেখ আছে তার পরিচয় শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও পাওয়া যায়।,  তবে গীতগোবিন্দ তে পটমঞ্জুরী রাগের সংখ্যা অধিক আর শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে পাহাড়ি রাগের রচিত পদের সংখ্যা অধিক যা গীতগোবিন্দ তে নেই।  গীতগোবিন্দ তে যেসব তালের উল্লেখ আছে,  তার পরিচয় শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও পাওয়া যায়।  যেমন যতি,  রূপক ও একতালি।

শুধুমাত্র সাঙ্গিতিক দিক দিয়ে নয়  রচনাশৈলী এবং আঙ্গিকের দিক দিয়েও উভয় কাব্যের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।  এক কথায় শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে জয়দেবের প্রত্যক্ষ প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই।

১১শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কে কোথায় আবিষ্কার করেনকবে তা প্রকাশিত হয়?

উত্তরঃ  1909 সালে বসন্ত রঞ্জন রায়  বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর অঞ্চলের নিকটবর্তী কালিক্যা  গ্রাম নিবাসী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গৃহ থেকে অযত্নরক্ষিত অবস্থায়  এই পুথি টি আবিষ্কার করেন।

১৯১৬ সালে তার সম্পাদনায় এটি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নাম দিয়ে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয়।

১২. বড়ু চন্ডীদাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তরঃ  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচয়িতা বডু চন্ডীদাস,  তার প্রকৃত নাম বা প্রকৃত পরিচয় সম্বন্ধে সুস্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। , কাব্যে তার তিনটি ভনিকা পাওয়া যায় –  বডু চন্ডীদাস,  চন্ডীদাস এবং আনন্ত চন্ডীদাস।  এর মধ্যে বডু চন্ডীদাস ভণিতা পাওয়া যায় ২৯৮ টি স্থানে।  ১০৭টি স্থানে পাওয়া যায়  চন্ডীদাস এবং সাতটি পদে ব্যবহৃত আনন্ত শব্দটি প্রক্ষিপ্ত বলেই মনে করা হয়।

ডক্টর মিহির চৌধুরী কামিল্যা  মনে করেন কোভিদ নাম চন্ডীদাস এবং বডু তার কৌশিক উপাধি বাডুজ্যে  বা বন্দোপাধ্যায়ের অপভ্রংশ।  কবি  চৈতন্য পূর্ববর্তী কালের মানুষ।  সম্ভবত পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তিনি জীবিত ছিলেন।

বডু চন্ডীদাস বাঁকুড়া জেলার সদর মহকুমাস্থ,  ছাতনার অধিবাসী ছিলেন।  তিনি বাসুলী দেবীর উপাসক ছিলেন এবং দেবী মন্দিরের নিকটবর্তী স্থানে তার চিত্রনাট্যগীতি পরিবেশনের নাট্যশালা ছিল।  এই বাসুলী দেবী প্রকৃতপক্ষে শক্তি দেবীর চন্ডী অথবা মনসার অপর নাম।  সম্ভবত বাসুলী দেবীর বাৎসরিক পূজায় গীত হওয়ার উদ্দেশ্যে দেবীর স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত কবি  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচনা করেছিলেন।

১৩বিদ্যাপতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ  বিদ্যাপতির সময়কাল আনুমানিক ১৩৭৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৪৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।  মিথিলার সীতা মারি মহকুমার বিসফি  গ্রামে এক শিক্ষিত শৈব ব্রাহ্মণ পরিবারে তার জন্ম।  তাদের পারিবারিক উপাধি ছিল ঠক্কর বা ঠাকুর।  তার পিতা ছিলেন গণপতি ঠাকুর।  বংশপরম্পরায় তারা মিথিলার রাজ্যসভায় উচ্চপদে আসীন ছিলেন।  বিদ্যাপতি স্বয়ং দেবী সিংহ ও শিবসিংহের সভাসদ ছিলেন।  শ্রী হরি মিত্রের অধীনে বিদ্যাপতি শিক্ষা গ্রহণ করে।

বাংলা সংগীতের ক্ষেত্রে বিদ্যাপতির দান অপরিসীম।  তার পদাবলী মৈথিলী ভাষায় রচিত হলেও একসময় তা বাংলায় খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল।  বৈষ্ণব পদাবলী তার শ্রেষ্ঠ রচনা।  তার পদাবলীতে যেমন আছে ভক্তি রস,  তেমন আছে মানবিক প্রেম ও শৃঙ্গার রস।  পরবর্তীকালের গীত কবিরা  তাকেই অনুসরণ করেছেন।  স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাপতির ভক্ত ছিলেন।

তিনি বিদ্যাপতির অনেক পদ সুর সংযোগে গাইতেন। বিদ্যাপতি রচিত ভরা বাদর মাহ ভাদর পথটিতে রবীন্দ্রনাথ সুর আরোগ করেছিলেন।

১৪কে দ্বিতীয় বিদ্যাপতি নামে খ্যাত ছিলেনতাকে এই নামে আখ্যায়িত করার কারণ কি?

উত্তরঃ  বাংলার বৈষ্ণব কবি গোবিন্দ দাস বিদ্যাপতির পদাঙ্ক অনুসরণ করতেন বলে তিনি দ্বিতীয় বিদ্যাপতি নামে খ্যাত হয়েছেন।  গোবিন্দ দাসের পদগুলিতে বিদ্যাপতির প্রভাব সুস্পষ্ট ভাবে লক্ষণীয়।  স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ গোবিন্দ দাসের রচনার ভক্ত ছিলেন।  গোবিন্দ দাস রচিত সুন্দরী রাধে আওয়ে বনি পদটিতে রবীন্দ্রনাথ সুর আরোপ করে  ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলীতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

বিদ্যাপতির ন্যায় গোবিন্দ দাসের পদগুলিও শব্দ মাধুর্য ও সুরলালিত্যে  অপূর্ব।  বাংলার কীর্তনীয়ারা তার পদসমূহ রস কীর্তন ও পালা কীর্তন এর অন্তর্ভুক্ত করে তাকে অমর করে রেখেছেন।

আরো পড়ুনঃ কালাপাহাড় – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পুর্ন আলোচনা; Kalyani University Bengali Syllabus 1st Semester 

Read More: নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলন 4th semester Kalyani University History CC 1ST Chapter. 

বিঃ দ্রঃ আমাদের আজকের এই বাংলা সংগীতের ইতিহাস অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলি তৈরি করতে আমাদের কিছু পাঠ্য বইয়েরও সাহায্য নিতে হয়েছে; তাই আমাদের আর্টস স্কুল ডট ইন এর আজকের এই বাংলা সংগীতের ইতিহাস এর আর্টিকেলটি নিয়ে যদি আপনাদের কারো সমস্যা হয়ে থাকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো আপনার সমস্যা দূরীকরণের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!