বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস; আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় হল মাধ্যমিক প্রাকৃতিক ভূগোলের বায়ুমণ্ডল অধ্যায়ের বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস যা তোমাদের আগামী মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বিশেষ সহায়ক হবে, তাই বায়ুমণ্ডল অধ্যায়ের ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর এর এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি পরে নিতে হবে।
মাধ্যমিক ভূগোল (বায়ুমণ্ডল অধ্যায়)
বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস
উষ্ণতার তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো।
উত্তরঃ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত যে গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে তাকে বায়ুমণ্ডল বলে। উষ্ণতার তারতম্যের ভিত্তিতে NASA-র বিজ্ঞানী প্যাটারসেন বায়ুমণ্ডলের স্তরের শ্রেণিবিন্যাস করেছেন। যেগুলি হল-
১) ট্রোপোস্ফিয়ারঃ
বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর হল এই ট্রোপোস্ফিয়ার। নিরক্ষীয় অঞ্চলে ১৮ কিমি এবং মেরু অঞ্চলে ৪ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত এই স্তরটি। প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে উষ্ণতা কমতে থাকে।
বৈশিষ্ট্যঃ আবহাওয়া সংক্রান্ত দুর্যোগ মেঘ, বৃষ্টি, বজ্রবিদ্যুৎ সবই এই স্তরে ঘটে বলে একে ক্ষুব্ধমন্ডল বলা হয়।
ট্রোপোপজঃ
ট্রোপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমা হল ট্রোপোপজ। এখানে উষ্ণতা হ্রাস বৃদ্ধি হয় না।
২) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারঃ
ট্রোপোপজের ওপরের স্তর হল স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার। ট্রপোপজের ওপর থেকে ৫০ কিমি পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উষ্ণতা বাড়ে।
বৈশিষ্ট্যঃ এই স্তরে আবহাওয়া সংক্রান্ত গোলোযোগ থাকে না বলে, একে শান্তমন্ডল বলে। এই স্তর দিয়ে দ্রুতগামী জেটবিমানগুলি চলাচল করে। তাছাড়া এই স্তরে সূর্যালোকে উপস্থিত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রস্মি শোষণকারী ওজোন গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে।
স্ট্র্যাটোপজঃ
স্ট্র্যাটস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমা হল স্ট্র্যাটোপজ, এখানে উষ্ণতার হ্রাস বৃদ্ধি হয় না।
৩) মেসোস্ফিয়ারঃ
স্ট্র্যাটোপজের ওপরের স্তরটি মেসোস্ফিয়ার নামে পরিচিত। স্ট্র্যাটোপজের ওপর থেকে ৮০ কিমি পর্যন্ত এই স্তরটি বিস্তৃত। এখানে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উষ্ণতা কমে।
বৈশিষ্ট্যঃ মহাকাশ থেকে আসা উল্কাপিণ্ড এই স্তরে এসে পুড়ে ছাই হয়।
মেসোপজঃ
মেসোস্ফিয়ার এর উর্ধ্বসীমা হল মেসোপজ। এই স্তরে উষ্ণতার হ্রাস বৃদ্ধি হয় না।
৪) আয়নোস্ফিয়ার / থার্মোস্ফিয়ারঃ
মেসোপজের ওপরের স্তরটি হল আয়নোস্ফিয়ার। মেসোপজের ওপর থেকে প্রায় ৫০০ কিমি পর্যন্ত এই স্তরটি বিস্তৃত। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রুত হারে উষ্ণতা বেড়ে প্রায় ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।
বৈশিষ্ট্যঃ এই স্তরে সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি, গামা রশ্মি, রঞ্জন রশ্মি ইত্যাদির প্রভাবে বায়ুস্তর আয়নিত হয়। এই স্তরের মাধ্যমে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়। সুমেরু ও কুমেরু প্রভা এই স্তরে সৃষ্টি হয়।
৫) এক্সোফিয়ারঃ
আয়নোস্ফিয়ারের ওপরের স্তর হল এক্সোস্ফিয়ার। আয়নোস্ফিয়ার থেকে প্রায় ৭৫০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। এই স্তরে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।
বৈশিষ্ট্যঃ এই স্তরে হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন গ্যাসের মাত্রা বেশি।
৬) ম্যাগনেটোস্ফিয়ারঃ
এক্সোস্ফিয়ারের ওপরের স্তরটি হল ম্যাগনেটোস্ফিয়ার। এক্সোস্ফিয়ারের ওপর থেকে বায়ুমণ্ডলের উর্ধ্বসীমা ১০০০০ কিমি পর্যন্ত।
বৈশিষ্ট্যঃ ইলেকট্রন ও প্রোটন দ্বারা গঠিত চৌম্বক ক্ষেত্র এই স্তরে সৃষ্টি হয়েছে।
অবশেষে আপনাকে/তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস এর প্রশ্নোত্তর গুলি পুরোপুরি পড়ার জন্য; এভাবেই www.artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস এর মতো আরো গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমিক ভূগোলের প্রশ্নোত্তর গুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি এবং সেগুলো পরে তোমরা তোমাদের আগামী মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারো।
বিঃদ্রঃ আজকের এই বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস এর নোটসটি তৈরি করা হয়েছে কিছু অভিজ্ঞ শিক্ষকের পরামর্শ মেনে যদিও তার সাথে সাথে সাথে কিছু পাঠ্য বইয়েরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাই বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস এর এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।