Menu

মগধের উত্থানের কারণ গুলি আলোচনা করো.

মগধের উত্থানের কারণ; আজকের এই আর্টিকেলের আমরা বিশেষত দেখতে চলেছি পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা পরিষদের wbchse  একাদশ শ্রেণীর অন্তর্গত  ইতিহাস সিলেবাস এর  রাজনীতির বিবর্তন অধ্যায়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর যা কিনা –

প্রশ্নঃ মহাজনপদ গুলির মধ্যে মগধের উত্থানের কারণ গুলি আলোচনা করো.

ভূমিকা:

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতে 16 টি মহাজনপদের অস্তিত্ব ছিল.  এই মহাজনপদ গুলির একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত সর্বদা.  অবশেষে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে উত্তর ভারতে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়. কোন একটি নির্দিষ্ট কারণে কিন্তু মগধ সর্বশক্তিমান হয়ে ওঠেনি,  মহাজনপদ গুলির মধ্যে মগধের উত্থানের পেছনে একাধিক কারণ বিদ্যমান ছিল. মগধের উত্থানের প্রধান কারণ গুলি হল.

মহাজনপদ গুলির মধ্যে মগধের উত্থানের কারণ গুলি আলোচনা করো
মহাজনপদ গুলির মধ্যে মগধের উত্থানের কারণ গুলি আলোচনা করো

১. ভৌগোলিক অবস্থানঃ

মগধ রাজ্য টি নদীও পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় এক ধরনের প্রাকৃতিক সুরক্ষিত বলয় তৈরি হয়েছিল এর চারিধারে।  মগধের প্রথম রাজধানী রাজগৃহ ছিল পাহাড় বেষ্টিত।  পরবর্তী রাজধানী পাটলিপুত্র গঙ্গা,   শোন ও গণ্ডকী নদী বেষ্টিত হয়ে যেন একজন জল দুর্গে পরিণত হয়েছিল।  ফলে শত্রুর পক্ষে আক্রমণ সহজ সাধ্য ছিল না।

২.  উর্বর কৃষিজমিঃ

গঙ্গা ও অন্যান্য নদীবিধৌত  মগধেরে কৃষিজমি  ছিল খুবই  উর্বর। কৃষিতে প্রচুর উৎপাদনের ফলে প্রভূত পরিমাণ রাজস্ব আদায় সম্ভব হতো।  যার ফলে সাম্রাজ্যঃ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠেছিল।  ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার এর মতে,  এই প্রথম একটি দক্ষ কৃষি অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে সাম্রাজ্যে কাঠামো গঠন এর সম্ভাবনা জন্ম লাভ করেছিল।

৩.  খনিজ সম্পদঃ

মগধে একাধিক তামা ও লোহার খনি ছিল।  এই খনি গুলি  থেকে উৎপন্ন  খনিজ পদার্থ সামরিক অস্ত্র শস্ত্র ও কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণে ব্যবহার করা হতো।  মগধের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষির উন্নতি হয়েছিল।

৪.  অরণ্য সম্পদঃ

মগধের  ঘন অরন্যের বৃক্ষ এবং হাতি যুদ্ধ উপকরণ হিসেবে কাজে লাগতো,  যার ফলে মগদের হস্তী বাহিনী ছিল যথেষ্ট সমৃদ্ধিশালী এবং শক্তিশালী ও বটে।

৫.  সুযোগ্য নেতৃত্বঃ

বিম্বিসার,  অজাত শত্রু,  মহাপদ্ম নন্দ এবং চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের  মতো শক্তিশালী  ও বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব  মগধের শাসক ছিলেন।  তাদের সুযোগ্য নেতৃত্ব মগধের উত্থান কে করেছিল।

৬.  মিশ্র সংস্কৃতিঃ  

মগদের সীমানায় একদিকে আর্য ও অন্যদিকে অনার্য সংস্কৃতির সহাবস্থান থাকায় এখানে এক মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। যা মগধের অগ্রগতিকে সহজ করেছিল।

৭. বৈদেশিক বাণিজ্যঃ

বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে মগধের রপ্তানি বাণিজ্য চলত।  মগধের  সমৃদ্ধ বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলে  সেখানকার অর্থনীতি মজবুত হয়েছিল।  এই আর্থিক শক্তি  মগধের সামরিক শক্তির ভিতও শক্ত করেছিল।

৮.  ভৌগোলিক দূরত্বঃ 

মগধের  ভৌগোলিক অবস্থানের তার উত্থানের ক্ষেত্রে সহায়ক ছিল।  কেননা ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল থেকে অনেক দূরে হওয়ায় বিদেশি আক্রমণকারীদের পক্ষে ভারতের অভ্যন্তরে এতদূরে আক্রমণ করার সহজ ছিল না।

উপসংহারঃ

মগধের উত্থান উত্তর ভারতের রাজনৈতিক  ঐক্যের পথ প্রশস্ত করে।  ঐতিহাসিক মেহো চন্দ্র রায় চৌধুরীর  মতে,  সূর্যকে কেন্দ্র করে যেভাবে গ্রহগুলি আবর্তিত হচ্ছে,  সেভাবে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে মগধ কে কেন্দ্র করে মহাজনপদ গুলিও আবর্তিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

 

আরো পড়ুন পলিস বা নগররাষ্ট্র কী? গ্রিক নগর রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

 

বিঃ দ্রঃ  আমাদের www.artsschool.in  ব্লগের আজকের  মহাজনপদ গুলির মধ্যে মগধের উত্থানের কারণ গুলি আলোচনা করো?  প্রশ্নটির উত্তর তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু রেফারেন্স বইয়ের সাহায্য নিতে হয়েছে.  যদিও আমাদের তরফ থেকে কোনো প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি.  তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনরকম সমস্যা হয়ে থাকে আমাদের ইমেইল করুন [email protected]  এই ঠিকানায়.  আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যা দূর করার.  ধন্যবাদ.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!