রমা যোশির সোনা কুড়ানো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই – মন্তব্যের মাধ্যমে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
“রমা যোশির সোনা কুড়ানো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই” প্রশ্ন উদ্ধৃত অংশটি মতি নন্দীর লেখা উপন্যাস ‘কোনি’ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে উক্তিটির বক্তা হলেন কোনি উপন্যাসের একজন সত্যনিষ্ঠ ব্যতিক্রমী চরিত্র প্রনবেন্দু বিশ্বাস। যিনি বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের একজন ট্রেনার এবং হিয়া মিত্রের কোচ।
‘কোনি’ উপন্যাসে প্রনবেন্দুর চরিত্রটি প্রথম থেকেই উজ্জ্বল। একজন সদর্থক মানুষ যেমন তার কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় থাকেন, তিনিও সর্বদাই এবং সর্বাংশেই তেমন একজন মানুষ।
তার চরিত্রটি আরো বেশি উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে দেখা যায় তার পক্ষপাতহীন মানসিকতা ও বিবেচনা শক্তির জন্য। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মতো মানসিক জোর এবং সাহসী মেরুদণ্ড তার আছে তার প্রমাণও আমরা পেয়েছি।
উপন্যাসে আমরা দেখেছি হিয়ার টাইম জানার গোপন উদ্দেশ্যে ক্ষিতীশ বালিগঞ্জ ক্লাবে গেলে সে হিয়াকে শিথিল ভাবে সাঁতার কাটার নির্দেশ দেয়; মাঝপথে জল থেকে উঠিয়েও উঠিয়েও নেয় – যাতে ক্ষিতীশের উদ্দেশ্য সফল না হয়। বোঝা যায় , সে কৌশলী প্রশিক্ষক। এই কৌশলগত দিকগুলো যে তাকে আরো দক্ষ করে তুলেছে তা বারবারই প্রমানিত হয়েছে সমগ্র উপন্যাসটিতে।
একজন গুরু তার সেরা শিষ্য বা শিষ্যাকে জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দেখানোর উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করেন। প্রনবেন্দুও হিয়াকে সকলের সামনে আনার জন্য গাণিতিক মাত্রায় অপেক্ষা করেছে। হিয়া মেডেল পেলে মনে মনে উচ্ছ্বসিত হয়েছে। অর্থাৎ তার শিষ্যার প্রতি যথেষ্ট দায়বদ্ধতা এবং কর্তব্যনিষ্ঠা আছে তার প্রমান মেলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
কিন্তু সাফল্যের উগ্র নীতিহীন চাহিদায় সে খেলোয়াড় সুলভ সততার মানসিকতা থেকে ভ্রষ্ট হতে পারে না। তাই স্টেট চ্যাম্পিয়ানশিপে অন্যায় ভাবে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করা এবং তার শিষ্যাকে প্রথম ঘোষণা করায় সে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করেছে।
প্রনবেন্দু বিশ্বাসই বোর্ড মিটিংয়ে সকলের বিপক্ষে গিয়ে স্পষ্ট ভাষায় নিজের মতামত জানিয়ে বলেছে – “ বেঙ্গলের স্বার্থেই কনকচাঁপা পালকে টিমে রাখতে হবে।“ বোঝা যায়, সংকীর্ন স্বার্থপরতায় নিজের কৃতিত্বকে স্বীকৃত দিতে সে রাজি নয়; তার মধ্যে জাতীয় চেতনার একটা বৃহত্তর ভাবাদর্শ আছে। অন্যান্য কর্তা ব্যক্তিরা এ বিষয়ে ভ্রুকুটি করলে সে হুমকির সুরে জানিয়ে দেয়, কোনিকে বেঙ্গল দলে না রাখলে সে নিজের সাঁতারুদের নামও প্রত্যাহার করবে। কুচক্রীদের কীভাবে শায়েস্তা করতে হয়, সে উপায়গুলি প্রনবেন্দু ভালোই জানে।
ধীরেন যখন প্রনবেন্দুর এ জাতীয় মনোভাব দেখে জানতে চায় যে, কোনিকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে তার কী স্বার্থ আছে, তখন প্রনবেন্দু বলে – “ রমা যোশির সোনা কুড়ানো বন্ধ ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই।“ এই বক্তব্যের মাধ্যমেই প্রনবেন্দু দেশের একজন সত্যনিষ্ঠ সৎ উদার ও আদর্শবাদী প্রশিক্ষক হয়ে ওঠেন।
ব্যক্তি স্বার্থের ওপর উঠে সেই মুহূর্তে তিনি একজন রাজ্যের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন। ব্যাক্তিগত আদর্শবোধ, সাঁতারের প্রতি ভালোবাসা, বাংলার ভালো মন্দের প্রতি অপরিসীম দায়বদ্ধতা এবং একজন যথার্থ ক্রীড়াবিদ না হলে এমন সময়োপযোগী মন্তব্য করা যায় না। প্রনবেন্দু বিশ্বাসের মতো মানুষরা আছেন বলেই আজও সত্যিকারের প্রতিভারা তাদের দক্ষতা প্রদর্শনের মাটি বা জলটুকু পায়; না হলে ষড়যন্তের কুয়াশায় অচিন প্রান্তরে তারা হারিয়ে যেত তাদের পক্ষে আর লোক সমাজে তাদের গুন প্রদর্শন বা পরিচিতি কখনোই সম্ভবপর হয়ে উঠত না।
অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে WBBSE board এর দশম শ্রেণী বা মাধ্যমিক সিলেবাসের অন্তর্গত রমা যোশির সোনা কুড়ানো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই – মন্তব্যের মাধ্যমে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো এর এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য, আর এভাবেই আর্টস স্কুল ডট ইন এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা আরো গুরুত্বপূর্ণ নোটস গুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।
বিঃদ্রঃ রমা যোশির সোনা কুড়ানো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই – মন্তব্যের মাধ্যমে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো। এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে কিছু শিক্ষক এর পরামর্শে এবং তার সাথে কিছু বইয়ের ও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাই এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তবে আমাদের ইমেল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।