Menu

ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন – মাধ্যমিক ইতিহাস

ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন; আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয়, যা wbbse board এর অন্তর্গত মাধ্যমিক ইতিহাস সিলেবাসের অন্তর্গত এবং তোমাদের আগামী মাধ্যমিক পরিক্ষার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করো।

 

উত্তরঃ গান্ধিজির নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলনের সময় (১৯৩০ – ১৯৩৪ খ্রিঃ) শ্রমিক আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। সাইমন কমিশন ভারতে আসার পর (১৯২৮ খ্রিঃ) থেকে নানা ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকার বিরোধী আন্দোলন তীব্রতা  পেতে শুরু করে। শ্রমিক আন্দোলনের ক্রমবর্ধমান ব্যপ্তিতে ভীত হয়ে সরকার আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে দুটি বিল পাশ করায়। এগুলি হল –

১. শিল্প বিরোধ বিল, এবং ২. জননিরাপত্তা বিল। প্রথম বিলতির দ্বারা ধর্মঘট নিষিদ্ধ হয় এবং দ্বিতীয় বিলটির দ্বারা শ্রমিক সংগঠকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলাঃ

ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি জন্মলাভ করার (১৯২৫ খ্রিঃ) পর থেকে কৃষক – শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলন তীব্রতা পেতে থাকে। ১৯২৯ সালে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বহু কমিউনিস্ট শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদেরকে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। আসলে কমিউনিস্ট পন্থী তীব্র কৃষক শ্রমিক আন্দোলন দমন করা সরকারের লক্ষ্য ছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন এস. এ ডাঙ্গে, এস.এস. মিরাজফর, এস.বি. ঘাটে, মজফর আহমেদ, কিশোরী লাল ঘোষ প্রমুখ। সেই সঙ্গে ছিলেন তিনজন ব্রিটিশ কমিউনিস্ট নেতা ব্রাডলে, স্প্রাট ও হাসিনসন।

লবণ সত্যাগ্রহ ও শ্রমিক আন্দোলনঃ

জাতীয় কংগ্রেস প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন করে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জানুয়ারি। ৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ণ স্বরাজের দাবিকে সামনে রেখে বোম্বাইয়ের প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক আন্দোলন শুরু করে, যার অধিকাংশ ছিল রেল শ্রমিক। ১৯৩০ এর ৬ এপ্রিল লবণ আইন ভঙ্গের মধ্যে দিয়ে গান্ধিজি যে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন, তাতে বোম্বাইয়ে রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক যোগ দেয়। ১৯৩০ এর ৭ মে গান্ধিজির গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারাদেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। মহারাষ্ট্রের শোলাপুরের বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘট করে।

গান্ধি দীবস পালনঃ

জাতীয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি ১৯৩০ এর ৬ জুলাই দিনটিকে ‘গান্ধি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। ওই দিনটিতে ৫০ হাজার শ্রমিক হরতালে অংশ নেয় এবং ৪৯ টি কারখানায় শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত থেকেও কর্মবিরতি পালন করে। মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা, সরকারি দমন নীতি, AITUC এর ভাঙন প্রভৃতি কারনে কমিউনিস্টরা এই পর্বে জাতীয় আন্দোলনের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ফলে শ্রমিক আন্দোলনে কমিউনিস্ট নেতৃত্বের পরিবর্তে কংগ্রেস নেতৃত্ব সক্রিয় হয়ে ওঠে।

কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলঃ

১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে আচার্য নরেন্দ্র দেব ও জয়প্রকাশ নারায়নের নেতৃত্বে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে ‘কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি’ গড়ে ওঠে। কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল মনে করতে শুধু স্বাধীনতা অর্জন নয়, দেশের শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থরক্ষারও প্রয়োজন আছে।

কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের লক্ষ ছিল – নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণী, শ্রমিক ও কৃষকদের মত শোষিত শ্রেণিকে একজোট করে গনঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা দখল করা।

১৯৩৭ – এর নির্বাচন ও শ্রমিক আন্দোলনঃ ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে সারাভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস সর্বত্র কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থন জানায় এবং তাদের হয়ে মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। নির্বাচনী ইস্তাহারে কংগ্রেস শ্রমিকদের স্বার্থে কিছু কর্মসূচী নেয়।

যেমন – ন্যায় মজুরি, ৪ ঘণ্টা কাজ, শ্রম বিরোধের মীমাংসা, ইউনিয়ন গঠন, ধর্মঘটের অধিকার প্রভৃতি। ওই নির্বাচনে ১১ টির মধ্যে ৭টি প্রদেশে কংগ্রেসি মন্ত্রীসভা গঠিত হলেও শ্রমিক শ্রেণী প্রবল উৎসাহে পুনরায় আন্দোলনমুখী হয়। বাংলার চটকলগুলিতে, কানপুর, বোম্বাই, আমেদাবাদ ও মাদ্রাসের কাপড়ের কলগুলিতে, কুলটি ও হীরাপুরের মার্টিন বার্ন লৌহ ইস্পাত কারখানায় এবং অসমের ডিগবয় খনিজ তেল শিল্পে শ্রমিক ধর্মঘট পালিত হয়।

আইন অমান্য আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণীর সক্রিয় অংশগ্রহণে এই আন্দোলনের শক্তিকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়।

 

আরো পড়ুন বিংশ শতকের ভারতবর্ষে শ্রমিক আন্দোলন-এর অগ্রগতি সম্পর্কে যা জানো লেখো।

 

Click Here to Download The PDF version of –ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস. 

 

অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন এর এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ার জন্য। এভাবেই চিরদিন আর্টস স্কুল ডট ইন এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন এর মতো আরো গুরুত্বপূর্ণ নোটস বা তথ্য গুলি তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি এবং তোমরা সেগুলো পড়ে সামনের মাধ্যমিক পরিক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে পারো।

 

বিঃদ্রঃ ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন এই আর্টিকেল / নোটসটি তৈরি করা হয়েছে কিছু অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পরামর্শ এবং পাঠ্য বইয়ের সাহায্য নিয়ে, যদিও শিক্ষকদের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিন্তু কোনো প্রকাশকের সাথে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি, তাই ভারতে আইন অমান্য আন্দোলন এর এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনোরকম সমস্যা থেকে তাহকে তবে আমাদের ইমেল করুন, এই ঠিকানায় – [email protected] Thank you.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!