যে আজন্ম ইজার পড়েছে; আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় মাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের অন্তর্গত বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধ থেকে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্ন এবং তাঁর উত্তর যেটি হল –
প্রশ্নঃ যে আজন্ম ইজার পড়েছে তার পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত – কোন প্রসঙ্গে এই মন্তব্য? ধুতি পরা অভ্যাস করা শক্ত কেন?
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যে পরশুরাম একটি উজ্জ্বল অধ্যায়। আলোর ঝলকানির মতো তিনি মধ্য বয়সে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হন এবং জাদুকরের আবিষ্ট করে ফেলেন। সাহিত্যের সঙ্গে বিজ্ঞানের যে বন্ধন এবং বিরোধ, তাকে বিজ্ঞানীর মতে তিনি অনুপুঙ্খে বিচার করেন। আর সাহিত্যিকের মতো ভাষা শিল্পে উত্তীর্ণ করেন। আলোচ্য “বাংলা সাহিত্যে বিজ্ঞান” প্রবন্ধ সেই ভাবনারই ফসল।
আলোচ্য প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক জানান ইংরেজি জানা ব্যক্তিদের পক্ষে বাংলায় পরিভাষা শিখে বিজ্ঞানচর্চা করা বাস্তবিক কষ্টকর। এই বক্তব্যকেই স্পষ্ট বিশ্লেষণের জন্য লেখক ধুতি এবং ইজারের প্রসঙ্গ এনেছেন। আসলে এই দুটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ইজার বলতে অভিধানিক ভাবে প্যান্ট পাজামা জাতীয় পরিধেয় বস্ত্র বোঝায়; কিন্তু এখানে বিশেষ অর্থে ইংরেজি ভাষা কে বোঝানো হয়েছে।
আসলে লেখক এর মূল উদ্দেশ্যগত ভাবটি ছিল – যারা বাল্যকাল থেকেই ইংরেজি পঠন-পাঠনে অভ্যস্ত তাদের পক্ষে নতুন করে বাংলা পরিভাষা শিখে বিজ্ঞান চর্চা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কাজ।
প্রাবন্ধিক বিজ্ঞান বাংলা বিষয়ক গ্রন্থ যাদের জন্য লেখা হয়, সেই পাঠককুলের মধ্যে দুটি শ্রেণী বিভাজন লক্ষ করেছেন-
এক – যারা ইংরেজি জানে না বা অতি অল্প জানে, সেই শ্রেণীর পাঠক।
দুই – যারা ইংরেজি জানেন ইংরেজিতে অল্পাধিক বিজ্ঞান পড়েছেন তারা দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠক।
প্রথম শ্রেণির পাঠক ইংরেজি ভাষা প্রভাব থেকে মুক্ত; ফলত তারা বাংলা পরিভাষা আয়ত্ত করে বিজ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রে সংস্কার বিরোধী হয়ে ওঠে না।
দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠকের ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষার ওপর দখল ও আনুগত্য থাকায় বাংলা পরিভাষা শেখা কঠিন হয়; আর বিজ্ঞান চর্চা তো হয়ে ওঠে রীতিমতো কষ্টকর।
বিষয়টি লেখক একটি দৃষ্টান্ত এর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। ছেলেবেলায় লেখক ব্রহ্মমোহন মল্লিকের জ্যামিতি বইতে পড়েছিলেন – ‘একটি নির্দিষ্ট সরল রেখার উপর একটি সমবাহু ত্রিভুজ অংকিত করিতে হইবে। নির্দেশিকাটি শিশু বয়সে প্রাবন্ধিকের বুঝতে অসুবিধা হয়নি।
কেননা, ইংরেজি না জানা এবং বাংলাতে প্রথম পাঠ হওয়ায় তা তার বোধগম্য হয় সহজেই। কিন্তু যে সকল ব্যক্তি ইংরেজি জিওমেট্রি পড়েছে, তাদের কাছে উক্ত প্রতিজ্ঞা বাক্যটি হরধনু ভাঙ্গার মত দুরহ কর্ম হয়ে উঠবে। কারণ, তার মস্তিষ্কের ভাষাগত বিরোধ অর্থ উপলব্ধির ক্ষেত্রে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। যেন ইজারা পড়ার অভ্যস্ত লোককে ধুতি পরার নির্দেশ দিয়েছে। এই অনভ্যস্ত অস্বাচ্ছন্দ্যই উক্ত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে
Read More তোমার লাস্ট ফরটি মিটার আমি ভুলবো না – উক্তিটি কার? প্রসঙ্গ সহ বক্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
যে আজন্ম ইজার পড়েছে; আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তোমাদের কীভাবে সাহায্য করেছে তা কমেন্ট করে জানাতে ভুলো না যেন, আর হ্যাঁ পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিকের আর্টসের বিষয়ে কোনো রকম জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদের কমেন্ট করো, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো তাঁর উত্তর দেওয়ার।
বিঃ দ্রঃ যে আজন্ম ইজার পড়েছে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তৈরি করার জন্য আমরা সাহায্য নিয়েছি কিছু পাঠ্য বইয়ের তবে প্রকাশক দের কারো সাথে আমাদের পক্ষে যোগাযোগ করা সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি, তাই যে আজন্ম ইজার পড়েছে এর এই উত্তরটি নিয়ে আপনাদের কারো কোনোরকম সমস্যা থাকলে আমাদের জানাতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায় ইমেল এর মাধ্যমে। আর এভাবেই আমাদের ছোট্ট ব্লগ https://artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট দেখিয়ো।