Menu

গারো পাহাড়ের নীচে প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণী।

গারো পাহাড়ের নীচে, আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় হল wbchse এর syllabus এর অন্তর্গত গারো পাহাড়ের নীচে গল্পের কিছু বড়ো প্রশ্ন ও তার উত্তর। গারো পাহাড়ের নীচে যেটা কিনা একটা ছোট গল্প মূলত সুভাস মুখোপাধ্যায়ের আমার বাংলা গল্প গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

গারো পাহাড়ের নীচে গল্পটি আমারা জানি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আমার বাংলা নামের গ্রন্থের অন্তর্গত। প্রথাগত ও চিরাচরিত ভুমিকার পরিবর্তে লেখক একটু অন্যভাবে এই গ্রন্থের ভুমিকা বর্ণনা করেছেন। এই গ্রন্থ লেখার উদ্দেশ্য ও রচনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কিত বহু তথ্য লেখক সাবলীল ভাবে এই গ্রন্থের ভুমিকা অংশে পাঠককে জানিয়েছেন।

তবে আজকে আমরা কিন্তু এই আর্টিকেলে কেবলমাত্র আমার বাংলা গ্রন্থের অন্তর্গত গারো পাহাড়ের নীচে গল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখবো। যেগুলো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাথিদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

গারো পাহাড়ের নীচে প্রশ্ন উত্তর
গারো পাহাড়ের নীচে প্রশ্ন উত্তর

তাহলে চলো এবার দেখে নেওয়া যাক সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত আমার বাংলা গ্রন্থের অন্তর্গত গারো পাহাড়ের নীচে গল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর

১) ‘তাই প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠল’ – প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল কেন? কে তাদের বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? ৪+১=৫

 

উত্তরঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘ গারো পাহাড়ের নীচে ‘ গল্পে লেখক  সমাজতান্ত্রিক জমিদারি শোষণের এক নির্মম ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। গারো পাহাড়ের নীচে সুসং পরগনার হাজংরা চাষাবাদে বেশ পারদর্শী ছিল। কিন্তু তাদের উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগ অংশ জমিদারের পাইক নানা অজুহাতে নিয়ে চলে যেত। প্রজারা হয়ে পড়ত নিঃস্ব, এর উপর ছিল নির্মম হাতিবেগার আইন। হাতি শিকারের শখ মেটাতে জমিদার পাহাড়ে মাচা বেঁধে সৈন্যসামন্ত নিয়ে বেশ আরামে ও খোশমেজাজে থাকতেন। আর গ্রামের অসহায় সাধারণ প্রজারা খাওয়ার চালচিঁড়ে বেঁধে সেখানে আসতে বাধ্য হত শুধুমাত্র জমিদারের শখ পুরন করার জন্য। জমিদার যেখানে মাচায় বেশ নিরাপদে থাকত আর সেখানে সাধারণ মানুষকে যেখানে হাতি আছে সেখানে বেড় দিয়ে দারাতে হত। ছেলে বুড়ো কাউকেই রেহাই দেওয়া হত না।

এভাবে গভীর জঙ্গলে জীবন বিপন্ন করে ঠায় দাড়িয়ে থাকার ফলে হয় সাপের কামড়ে কিংবা বাঘের আক্রমণে বহু মানুষ মারা যেত। জমিদারের হাতি শিকারের শখ মেটাতে নিরীহ অসহায় প্রজারা অকালে প্রান দিত। এই নিষ্ঠুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে প্রজারা একসময় বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। চাকলায় চাকলায় মিটিং শুরু হয়, কামারশালায় তৈরি হয় বিশাল বিশাল অস্ত্র। শেষ পর্যন্ত জমিদারের সৈন্যদলের কাছে প্রজারা হেরে গেলেও অবশেষে হাতি বেগার বন্ধ হয়।

আর এই হাতিবেগার থেকে মুক্তি পাবার জন্য যিনি সকল প্রজাদের একত্রিত করেছিলেন এবং সকল চাষিদের জমিদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি হলেন গোরাচাঁদ মাস্টার।

আরো পড়ুন শিক্ষা সংস্কারে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা করো

২) গারো পাহাড়ের নীচে যারা বাস করে তাদের জীবনযাত্রার বর্ণনা দাও। ৫ 

 

উত্তরঃ  সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত গারো পাহাড়ের নীচে রচনাংশে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী গারো ও হাজং প্রভৃতি জনজাতির কথা জানা যায়।

গারো পাহাড়ের নীচে সুসং পরগনায় বাস করে হাজং গারো কোচ বানাই ডালু মার্গান প্রভৃতি নানা উপজাতির মানুষ। এখানকার প্রথম বাসিন্দা হাজংরা ছিল চাষাবাদে খুব দক্ষ। তাই গারোরা এদের নাম দিয়েছিল হাজং অর্থাৎ চাষের পোকা। গারোদের ভাষা আলাদা। বুনো জন্তুদের ভয়ে তারা মাচার ওপর ঘর বেঁধে পোষা হাঁস মুরগিদের নিয়ে মাচাতেই থাকে। সেখানেই রান্না, খাওয়া সব ব্যবস্থায় থাকে।

চাষের সময় প্রত্যেক জনজাতির মানুষ হাল বলদ নিয়ে চাষাবাদ করে। ধান কাটার সময় নারী পুরুষ সকলেই কাস্তে হাতে মাঠে যায়। পিঠে আটিবাধা ধান নিয়ে ছোটো ছেলের দল খামারে এসে জোটে  কিন্তু পরিশ্রম করে উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগটাই জমিদারের পাইক বরকন্দাজ এসে পাওনা গণ্ডার নামে আত্মসাৎ করে।

হাতিবেগার আইনের কারনে জমিদারের শখ মেটাতে হাতি শিকারের সময় জঙ্গল ঘিরে ঠায় দাড়িয়ে থাকতে হত গ্রামের অসহায় নিরীহ প্রজাদের। প্রজাবিদ্রোহের ফলে সেই আইন বাতিল হলেও তাদের দুর্দশা ঘোচেনি।

গারোদের নিজস্ব ভাষা আছে। হাজং ডালুদের ভাষা বাংলা হলেও তাদের উচ্চারণ একটু আলাদা। এই জনজাতিরদের নিজস্বতা ফুটে ওঠে তাদের ভাষার ব্যাবহারে।

অনেক বছর আগে এক সময় গারো পাহাড়ের নীচের বাসিন্দাদের গোলা ভরা ধান, মাঠ ভরা শস্য ছিল। তাদের খেয়েপরে বেঁচে থাকতে কোনো অসুবিধায় হত না। কিন্তু জমিদারের নির্মম অত্যাচারে এখন তা কল্পনাতীত।

আরো পড়ুন একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর প্রথম অধ্যায়

৩) ‘ওদের আমরা আপন করে নিইনি তাই ওরাও আমাদের পর পর ভাবে’ – গারো পাহাড়ের নীচে রচনাংশ অবলম্বনে লাইনটির মর্মার্থ লেখো। ৫ 

 

উত্তরঃ  সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের গারো পাহাড়ের নীচে রচনাংশে সুসং পরগণার প্রকৃতি ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার কথা সহজ সরল ভাষায় রূপায়িত করেছেন। লেখকের দরদি মন ওই অঞ্চলের জনজাতির কথা বিবরণের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। গারো পাহাড়ের নীচে বসবাসকারী হাজং গারো কোচ বানাই ডালু মার্গান প্রভৃতি জনজাতি বর্তমানে শিক্ষা ও সভ্যতার আলোকবর্ষ থেকে বহু দূরে।

আধুনিক সভ্য জগতের শিক্ষিত স্বার্থান্বেষী, আত্মকেন্দ্রিক মানুষের মতো ভোগবাদী ও বিলাসবহুল জীবনযাপন তারা করে না। তাই তারা সভ্যতার বিপরীতে আদিম জনজাতি হিসাবেই পরিচিতি পায়।

বাঙালিরা কিন্তু অবিভক্ত বঙ্গদেশের আদিম অধিবাসী নয়। বঙ্গ দেশের আদিম অধিবাসী হিসাবে বিভিন্ন পাহাড়ি ও সমতলি জনজাতিদের এ স্থানটির প্রতি অধিকার অনেক বেশি। অথচ আমরা আধুনিক সভ্য জাতি হয়েও তাদের আপন করে নিতে পারিনি। ভূমিপুত্রের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি। এই বৈষম্য আর অবহেলায় ওরা নিজেদের উপেক্ষিত ভাবে। প্রতিটি জাতি উপজাতি স্বভূমে এবং অন্যত্র তাদের জাতিসত্তা এবং স্বকীয় শিল্প সংস্কৃতির বিকাশে এগিয়ে যাবে – লেখক এমনই চান।

আমাদের হৃদয়ের মমত্ব আর ভালোবাসা তাদের প্রতি বর্ষিত হয়নি, তাই তারাও একই দেশের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের পর বলেই ভেবে এসেছে। আলোচ্য অংশে লেখক এই বাস্তব সত্যকেই ফুটিয়ে তুলেছেন।

আরো পড়ুন Strong Roots by APJ Abdul Kalam Class12 WBCHSE

অবশেষে আপনাকে/আপনাকে  অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে এই পোস্টটি পড়ার জন্য। এভাবেই চিরদিন https://artsschool.in এর এই ব্লগের পাশে থাকুন যাতে ভবিষ্যতে আরো উন্নত মানের Study material & Notes আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারি। একটাই অনুরোধ করবো নিয়মিত আমাদের এই ব্লগে Visit করুন এবং নিজের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলুন।

Comments 1

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!