Menu

দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতার মূলভাব নিজের ভাষায় লেখ

দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতার মূলভাব; আজকের আমাদের অর্থাৎwww.artsschool.in  ব্লগের এই আর্টিকেল আমরা তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের WBCHSE Board এর একাদশ শ্রেণির বাংলা সিলেবাস এর অন্তর্গত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত, দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন,  যা কিনা  দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতার মূলভাব কি তোমার নিজের ভাষায় তা আলোচনা করো,  যেটি তোমাদের আগামী পরীক্ষা বিশেষ  গুরুত্বপূর্ণ।

 

প্রশ্নঃ দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতার মূলভাব কি তা তোমার নিজের ভাষায়  আলোচনা করো.

 

উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতাটি  তার ফনিমনসা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত একটি অনবদ্য কবিতা,  পরাধীন ভারতবর্ষের মাটিতে দাঁড়িয়ে ইংরেজ শক্তির বিরুদ্ধে কোবির বিদ্রোহী মনোভাব ব্যক্ত করেছেন এই কবিতার মাধ্যমে।  আলোচ্য কবিতায় ইংরেজ শক্তির শোষণ যন্ত্রের স্বরূপ কবি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।

 

১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তথা বাংলা ১৩৩১ সনে 17 ই মাঘ বিজলী পত্রিকায় এই কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়।  কবিতাটির মধ্যে কবি কাজী নজ্রুল ইসলামের জাতীয়তাবোধ ও দেশপ্রেমের  উজ্জল  রুপটি ফুটে উঠেছে।  সামাজিক অভিজ্ঞতা থেকে কবি নজরুল ইসলাম বুঝিয়েছেন যারা সত্যের পূজারী যারা দেশের মঙ্গলের জন্য স্বর্গ সুখ বিসর্জন দিয়ে দেশমাতৃকার মুক্তির ঝাঁপিয়ে পড়েছেন  তাদেরকেই দেশদ্রোহী অথবা রাজদ্রোহী রূপে চিহ্নিত করা হচ্ছে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা।

 

কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতে ভারতের বীর সন্তানেরা সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে অবস্থিত আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দী। কবি কাজী নজ্রুল ইসলাম প্রত্যয় করেছেন শত শত বিপ্লবী শরীর রক্তে রাঙ্গা এবং তারা বন্দীশালার পিঞ্জরাবদ্ধ হয়ে আছে। তারা দেশমাতৃকার বেদনা বুকের মধ্যে উপলব্ধি করেছিলেন বলে এই শারীরিক যন্ত্রণা কে মাথা পেতে স্বীকার করে নিয়েছেন।  তারা দেখেছিলেন আমাদের সৌন্দর্য পুরী ভারত বর্ষ ইংরেজদের অপশাসনে যক্ষপুরীতে পরিণত হয়েছে।  তাইতো কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতার মাধ্যমে  বলেছেন-

 

 মুক্ত কি আজ বন্দিনী বাণী?
 ধ্বংস হলো কি রক্ষপুর।

 

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতায় স্বদেশের দুর্দশার চিত্র টি অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি দেখেছেন, কামান গোলা বর্ষণ কামানোর বর্ষণে সত্যের পূজারীরা হারিয়ে গিয়েছেন, মৃত্যুর কবলে ঢলে পড়েছেন একে একে নির্ভয়ে। শান্তি সুচিতা সুব্রতা রক্তের বন্যায় ভেসে গেছে চারিদিক। চারিদিকে আর্তনাদ প্রতিবাদীদের কণ্ঠস্বর, নির্বাসিত দেশপ্রেমিকদের কথা বলতে গিয়ে কবির মনে প্রশ্নটি বারংবার জেগেছে, তাই তো তিনি তাঁর কবিতার মাধ্যমে প্রশ্নটি করেছেন-

 

হোমানল হতে বানীর রক্ষী
বীর ছেলেদের চর্বি ঘি?
হাই সৌখিন পূজারী, বৃথাই
দেবীর শঙ্খে দিতেছে ফুঁ।

 

যারাই মুক্ত শতদলের মত সত্যের পূজারী তারাই ইংরেজের রোষানলে আন্দামানে বন্দি, তাই খুবই আত্ম পাঞ্চজনী শঙ্খ বাজানোর আহ্বান জানিয়েছেন এই পাঞ্চজন্য শঙ্খ যেন অত্যাচারী শাসকের বিনাশ ঘটিয়ে সত্যবাদী দেশমাতৃকার সন্তানদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটাক এটাই কবী কাজী নজরুল ইসলামের কাম্য।

 

পরিশেষে বলা যায় যে, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতায় তৎকালীন ভারত শাসক তথা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য মনোভাব পোষণ করেছেন। শুধু তাই নয় অপরপক্ষে দেশ জননীর বন্দি সন্তানদের প্রতি অমরতা ও প্রার্থনা করেছেন। সমগ্র কবিতার মাধ্যমে তিনি দেশ জননী তথা ভারত মাতার বিদ্রোহী সন্তানদের প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করেছেন।

 

আরো পড়ুনঃ কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্য জীবনী কাব্যের সাধারণ পরিচয় দিয়ে কাব্যটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলোচনা করো।

 

বিঃ দ্রঃ আমাদের আর্টিকেলের আজকের আলোচনার বিষয় – দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতার মূলভাব; তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু রেফারেন্স বইয়ের সাহায্য নিতে হয়েছে। যদিও যার জন্য আমাদের তরফ থেকে কোনো প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি। তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনরকম সমস্যা হয়ে, তাহলে আমাদের ইমেইল করুন [email protected]  এই ঠিকানায়, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার সমস্যা সমাধানের।

 

আর এভাবেই আমাদের এই শিক্ষামূলক ব্লগ www.artsschool.in এর পাশে থেকে তোমাদের সাপোর্ট এবং ভালোবাসা দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর গুলি নিয়ে হাজির হতে পারি। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!