Menu

বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন সম্পূর্ণ আলোচনা

বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন দত্ত; আজকের এই আর্টিকেলে তোমারা পাবে কল্যাণী ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের চতুর্থ সেমিস্টারের LCC বাংলা সিলেবাসের অন্তর্গত বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন কবিতার সম্পূর্ণ আলোচনা; যেখানে থাকবে কবিতা তার উৎস প্রসঙ্গ এবং বিষয় সংক্ষেপ। তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি যা তোমাদের আগামী চতুর্থ সেমিস্টার পরিক্ষার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হয়ে উঠবে।

বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন দত্ত

“My Native Land, Good night!”: Byron

রেখো, মা, দাসেরে মনে,     এ মিনতি করি পদে।

সাধিতে মনের সাদ,

ঘটে যদি পরমাদ,

মধুহীন করো না গো         তব মনঃকোকনদে।

প্রবাসে, দৈবের বশে,

জীব-তারা যদি খসে

এ দেহ-আকাশ হতে,-         নাহি খেদ তাহে।

জন্মিলে মরিতে হবে,

অমর কে কোথা কবে,

চিরস্থির কবে নীর,           হায় রে, জীবন-নদে?

কিন্তু যদি রাখ মনে,

নাহি মা ডরি শমনে,

মক্ষিকাও গলে না গো,      পড়িলে অমৃত-হ্রদে!

সেই ধন্য নরকুলে,

লোকে যারে নাহি ভুলে,

মনের মন্দিরে সদা                     সেবে সর্বজন,-

কিন্তু কোন গুণ আছে,

যাচিব ও যে তব কাছে,

হেন অমরতা আমি,          কহ, গো, শ্যামা জন্মদে!

তবে যদি দয়া করো,

ভুল দোষ, গুণ ধরো,

অমর করিয়া বর             দেহ দাসে, সুবরদে!-

ফুটি যেন স্মৃতি- জলে,

মানসে, মা, যথা ফলে

মধুময় তামরস                 কি বসন্ত, কি শরদে!

 কবিতার উৎস

বঙ্গভূমির প্রতি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের একটি গীতি কবিতা।  মধুসূদন রচনাবলী সংকলন করতে গিয়ে সংকলক এই কবিতাটিকে সরাসরি সংকলন করিয়েছিলেন গ্রন্থেরই নানা কবিতা বিভাগে। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুন ফ্রান্সে যাওয়ার পূর্বে পাঁচই জুন কবি কবিতাটি রচনা করেন।  বন্ধু গৌর দাস বসাকে লেখা একটি চিঠিতে এর উল্লেখ আছে।

বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন দত্ত পাঠ প্রসঙ্গ 

বঙ্গমাতার কোল ছেড়ে একদা কবি শ্রী মধুসূদন চলে গিয়েছিলেন অনেক দূরে।  প্রথমে তিনি গিয়েছিলেন স্বদেশের মাদ্রাজে,  পড়ে ইংল্যান্ডে এবং তার ও পরে ফ্রান্সের  ভার্সাই নগরে।  দুরন্ত প্রতিভাবান,  ইংরেজি সাহিত্যের প্রবল অনুরাগী মধুসূদন ভেবেছিলেন বিশ্ব কাব্য মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে  যশস্বী হবেন।  তাই তার মনে হয়েছে,  মাথা বঙ্গভূমির প্রতি তিনি কোনদিন ওই যথেষ্ট সচেতন থাকেন নি।

তেমন ভাবে কোন দায়িত্ব পালনও করেননি। তাই এই কবিতায় তিনি বঙ্গমাতা বঙ্গভূমিকে যেন পূজা করেছেন।  তার বক্তব্য তিনি মাকে ভুলে থাকলেও মা যেন তাকে মনে রাখেন,  মার মন থেকে যেন কিছুতেই তিনি মধুহীন না হন।

বিষয় সংক্ষেপ

মা যেন তার চিরদাস কবিকে মনে রাখেন,  বঙ্গভূমির প্রতি কবির এই মিনতি।  মনের ইচ্ছা পূরণ করতে যদি কোন ভুল ঘটে থাকে,  তবুও মা যেন তার লাল পদ্ম সদৃশ মনকে মধুহীন না করেন।  বিদেশে দৈবের বা ভাগ্যের কারণে যদি কোভিদ জীবন তারা খসে পড়ে দেহের আকাশ থেকে,  তাতে কবির কোন ক্ষেদ বা দুঃখ নেই।  কারণ কবি জানেন জন্ম নিলে মরতে একদিন হবেই;  কেউ কোথাও অমর নয়।  নদীতে যেমন জল কখনো স্থির থাকে না,  তেমনি জীবন নদীতে ও প্রাণ  স্থির বা অচঞ্চল নয়।  কিন্তু মা যদি কবিকে মনে রাখেন,  তাহলে কবি মৃত্যুকেও ভয় পান না।

কারণ অমরতা দানকারী অমৃতে  যদি মাছি গিয়ে পড়ে,  তবে সে অমর হয় না,   তার মৃত্যু হয়।  মানব সমাজে সেই ধন্য যাকে মানুষ কখনো ভোলে না,  মনের মন্দিরে চিরকালের আসন দিয়ে ধরে রাখে।  কিন্তু কবির এমন কোন গুন আছে যে,  দেশ মায়ের কাছে এমন অমরতা দাবি করতে পারেন।  তবে শ্যামা জন্মদাত্রী যদি তাকে দয়া করেন,  ভুল বা দোষকে গুণ বলে ধরে নেন;  তাহলে তিনি সুবরদাত্রী বলে কবিকে অমরতার বর দান করতে পারেন।  কবি যেন স্মৃতি জলে ফুটে থাকেন মধুমাখা পদ্মের মতো,  বসন্ত কিম্বা শরতে।

আরো পড়ুনঃ নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ কবিতা সম্পূর্ণ আলোচনা – Kalyani University – 1st Semester Bengali Syllabus

আরো পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারণা-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারণা-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। 

বিঃদ্রঃ আমাদের আজকের আর্টস স্কুল ডট ইন এর আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু পাঠ্য বই তথা সহায়ক বইয়েরও সাহায্য নিতে হয়েছে যদিও এর জন্য আমাদের তরফ থেকে কোনো প্রকাশকের সাথে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি এবং জার জন্য আমরা তাদের কাছ থেক কোনো রকম অনুমতি ও নিতে পারিনি; তাই আমাদের আজকের এই Kalyani University এর 2nd Year এর 4th Semester এর Bengali LCC পেপারের অন্তর্গত কবিতা নিয়ে তৈরি করা আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কোনো সমস্যা হয়ে থাকে আমাদের জানান, আমরা যথাসাধ্য ব্যবস্থা নেবো আপনাদের সমস্যা দূরীকরণের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!