মগধরাজ রাজহংসের চরিত্র; আজকের এই আর্টিকেলের আমরা তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ শিক্ষা পরিষদের (WBCHSE) একাদশ শ্রেণির সংস্কৃত সিলেবাস এর অন্তর্গত দশকুমারচরিতম্ নামক পাঠ্যাংশ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর; যা হল- দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশের মগধরাজ রাজহংসের চরিত্র বর্ণনা করো। তাহলে চলো দেখে নেওয়া যাক আজকের উত্তরটিঃ
প্রশ্নঃ দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশের মগধরাজ রাজহংসের চরিত্র বর্ণনা করো।
উত্তরঃ কবি দন্তী রচিত গদ্যকাব্য দশকুমারচরিতম্ এর পূর্ব পীঠিকার প্রথমোচ্ছ্বাসের অংশ বিশেষ হলো আলোচ্য পাঠাংশ দশকুমারচরিতম্। আর এই পাঠ্যাংশের প্রধান চরিত্র হলো মগধ রাজ্যের রাজা রাজহংশ। কয়েকটি বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে কবি তাকে পাঠকবর্গের সম্মুখে উপস্থাপিত করেছেন। যেগুলি হল –
প্রথমতঃ
মগধাপতি রাজহংস ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা. তিনি যুদ্ধবিদ্যায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। তার চতুরঙ্গ সেনা ছিল অদম্য। তার মন্দরপর্বতের নাম প্রশারিত বাহুদন্ড শত্রু সমাবেশ রুপ প্রকাণ্ড সমুদ্রকে মন্থন করেছিল। ইন্দ্রপুরীর বনে অর্থাৎ নন্দন কাননে তরুণী অপ্সরাগণ অবিরাম তার কীর্তিগাথা গাইতো। আর রাজার এই কীর্তীর সঙ্গে শরতের চাঁদ, কুন্দ ফুল, কর্পূরদল, তুষার, মুক্ত মালা, মৃণাল, মরাল, ঐরাবত, জল, দুগ্ধ, মহাদেবের অট্টহাসি, কৈলাস প্রভৃতির নির্মলতার তুলনা করেছেন কবি দন্তী।

শুধু তাই নয় রাজার কীর্তি ছড়িয়ে পড়েছিল দিক-দিগন্তে। তার বীরত্বের তেজ শত্রুদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক ছিল, তাই রাজাকে সর্বদা মধ্য গগনের সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হতো। তিনি বড় বড় অস্ত্র চালনায় পারদর্শী ছিলেন। ফলে অসংখ্য যুদ্ধক্ষেত্রে বহু ক্ষত্রিয় তার দ্বারা নিহত হয়েছিলেন। যার উদাহরণ হল যার উদাহরণ হল, মালবরাজ মানসারের সঙ্গে রাজা অদম্য যুদ্ধ। আত্মাভিমানী গর্বোদ্ধত অত্যাচারীর মালব রাজের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে রাজহংস যুদ্ধযাত্রা করেছিলেন এবং অতীব পরাক্রমী ও পারদর্শী চতুরঙ্গ সেনারা মগধরাজ মালব রাজকে পরাজিত করেছিলেন।
দ্বিতীয়তঃ
মগধাপতি কেবল পরাক্রমী যোদ্ধাই নন তিনি ছিলেন একজন দয়ালু ব্যক্তিত্বের অধিকারীও। প্রচন্ড যুদ্ধে মালব রাজের সমস্ত সেনা কে ধ্বংস করে তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু মালব রাজ্যকে নিজের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেননি বরং মালব রাজ মানসারকে তার রাজ্য পুনরায় হস্তান্তরিত করেন।
তৃতীয়তঃ
রাজহংস কেবল বীরত্বের সহিত রাজ্য চালনা এবং শত্রু দমনই করেননি। একই সাথে বিদ্যাচর্চার প্রসার এবং ব্রাহ্মণ কুলের রক্ষা করেছেন। তিনি সদাসর্বদা সমূহ যোগ্য করতেন। কেবল তাই নয়, যজ্ঞান্তে বিপুল দক্ষিণা দ্বারা সজ্জন ব্রাহ্মণ কে প্রতিপালন ও করেছেন। আর ব্রাহ্মণগণ তার আশ্রয়ে ও দানে সুরক্ষিত থেকে গূঢ় বিদ্যা চর্চায় মনোনিবেশ করতেন।
পরিশেষে বলা যায় যে, রাজহংস ছিলেন একজন সুশাসক। আর তার সুশাসন নেই মগধ রাজধানী পুষ্প পুরি হয়ে উঠেছিল সম্পদে, অভিজাত্যে, ইন্দ্রলোকের বৈভব শালী। অর্থাৎ রাজহংসের চরিত্রটিকে সর্বগুণে গুণান্বিত রূপে কবি দন্তি উপস্থাপিত করেছেন।
আরো পড়ুন – রামকৃষ্ণদেব ও নরেন্দ্রনাথের সাক্ষাৎ কিভাবে ঘটেছিল তা আলোচনা করো।
বিঃ দ্রঃ আজকে আমাদের এই ব্লগ অর্থাৎ আর্টস স্কুল ডট ইন এর এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় ছিল দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশের মগধরাজ রাজহংসের চরিত্র বর্ণনা করো। যার উত্তরটি তৈরি করার জন্য আমাদের কিছু রেফারেন্স বইয়ের সাহায্য নিতে হয়েছে; যদিও এর জন্য আমাদের তরফ থেকে কোনো প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি; তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি নিয়ে যদি আপনাদের কারো কোন রকম সমস্যা হয়ে থাকে; দয়া করে আমাদের ইমেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়, আমরা চেষ্টা করব আপনার সমস্যা দূরীকরণের। ধন্যবাদ।