Menu

শিল্প গড়ে ওঠার কারণ গুলি বিষদে আলোচনা করো

শিল্প গড়ে ওঠার কারণ; কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারন গুলি জানতে হলে আমাদের আগে জানা দরকার শিল্প কাকে বলে এবং এর থেকে আমাদের কি কি লাভ হয়ে থাকে।

শিল্প কী বা শিল্প কাকে বলে?

প্রকৃতিতে প্রাপ্ত বস্তুকে যখন যন্ত্র ও প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহার এর উপযোগী সামগ্রীতে পরিনত করা হয় তখন তাকে আমরা শিল্প বলে থাকি। যা একটি দেশের উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। আসল কথা কলকারখানার মাধ্যমে মূল উপাদানের রূপান্তরের নাম হল শিল্প। প্রযুক্তিগত কলাকৌশলের দ্বারা এক বা একাধিক প্রক্রিয়ায় যখন কাঁচামালকে প্রাথমিক অবস্থা থেকে ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় পরিবর্তন করা হয় তখন তাকে বলে শিল্প।

সমাজে কাজের ধরন অনুযায়ী যে স্তর ঠিক করা হয়েছে সেখানে শিল্প দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের মধ্যে পড়ে। শিল্প দেশের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটায়। যে দেশ শিল্পে যত উন্নত সেই দেশের অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ।

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারণ গুলি হল- 

কোনো একটি নির্দিষ্ট কারনে কিন্তু কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠে না, এর পেছনে একাধিক কারন থাকে। কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারন গুলিকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এগুলি হল – ১) প্রাকৃতিক কারন ও ২) অর্থনৈতিক কারন।

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারন
কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারন

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার প্রাকৃতিক কারন গুলি হলঃ

1. কাঁচামালঃ 

শিল্প স্থাপনের প্রথম ও প্রধান উপাদান বা কারন হল কাঁচামাল। শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে অরণ্যজাত, কৃষিজাত ও খনিজদ্রব্য ব্যবহৃত হয়। এসব কাঁচামালের বণ্টন ও সহজপ্রাপ্তির ওপর ভিত্তি করেই শিল্প গড়ে ওঠে।

তবে শিল্পের কাঁচামালের প্রকৃতিও শিল্পের অবস্থানের ওপর প্রভাব ফেলে। কারন শিল্পের কাঁচামালকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে যা কিনা – ১) বিশুদ্ধ কাঁচামাল ও ২) অবিশুদ্ধ কাঁচামাল। বিশুদ্ধ কাঁচামাল নির্ভর শিল্পগুলি কাঁচামাল উৎপাদন অঞ্চলে, বাজার অথবা অন্যত্র গড়ে ওঠে। অন্যদিকে অবিশুদ্ধ কাঁচামাল নির্ভর শিল্পগুলি প্রধানত কাঁচামালের প্রাপ্তিস্থানে গড়ে ওঠার প্রবণতা লক্ষ করা যায়।

2. জলঃ

শিল্প স্থাপনে জল অপরিহার্য। তাপবিদ্যুৎ বস্ত্র, লৌহইস্পাত প্রভৃতি শিল্পে প্রচুর জল লাগে। যার জন্য যে অঞ্চলে খুব সহজেই জল পাওয়া যায় সেই সকল অঞ্চলগুলিতেই এই সকল শিল্প গুলি গড়ে ওঠার প্রবণতা দেখতে পাওয়া যায়।

3. অনুকূল জলবায়ুঃ

আদ্র জলবায়ু বয়ন শিল্পের এবং শুষ্ক ও রোদ-ঝলমলে জলবায়ু চলচ্চিত্র শিল্পের সহায়ক। আবার নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে শ্রমিকরা সহজে ক্লান্ত হয় না, বেশিক্ষণ কাজ করতে পারে। ফলে উৎপাদনও বেশি হয়। এই জন্য বিশেষ জলবায়ু অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বিশেষ বিশেষ শিল্পগুলি গড়ে উঠেছে।

  1. জমিঃ

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল জমি কারন একটি শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে হলে অনেকটা জমির প্রয়োজন হয়। সেজন্য জমির  সহজলভ্যতা শিল্প স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে জমি সস্তা এবং শিল্প স্থাপনের অন্যান্য পরিকাঠামো আছে সেখানে শিল্প গড়ে উঠতে দেখা যায়।

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার অর্থনৈতিক কারন গুলি হলঃ

1. শ্রমিকঃ

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে তুলতে গেলে প্রচুর পরিমাণে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন। শ্রমিকের দক্ষতার ওপর শিল্পজাত দ্রব্যের গুনমান নির্ভর করে।  সস্তায় দক্ষ ও শিক্ষিত শ্রমিকের জোগান যেখানে বেশি সেখানে শিল্প গড়ে ওঠে। একই কারনে ভারি শিল্পাঞ্চল জনবহুল হয়ে থাকে।

  1. পরিবহনঃ

শিল্পের কাঁচামালকে কারখানায় নিয়ে আসা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ উন্নত পরিবহনের প্রয়োজন। এছাড়া সুলভ ও দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা শিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আর এরকম দ্রুত ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থাযুক্ত অঞ্চলেই শিল্পগুলি গড়ে ওঠে।

  1. বাজারঃ

শিল্প স্থাপনের পর শিল্পজাত পণ্যের জন্য চাহিদা সম্পন্ন বাজারের প্রয়োজন। উৎপাদিত পণ্যের স্থানীয় বা অভ্যন্তরীণ অথবা আন্তর্জাতিক বাজার থাকলে শিল্প গড়ে ওঠে। এছাড়াও যেখানে যে পণ্যের চাহিদা বেশি সেখানে সেই শিল্পই গড়ে উঠতে দেখা যায়।

4. বিদ্যুৎ শক্তিঃ

একটি শিল্প কেন্দ্রে অনেক যন্ত্রপাতির প্রয়োজন আর সেগুলোকে চালানোর জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। সস্তায় বিদ্যুৎ সহজলভ্য হয় এমন স্থানেই শিল্প গড়ে ওঠে।

5. মূলধনঃ

একটি শিল্প গড়ে তুলতে গেলে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক অবস্থায় পার্শিরা মূলধন বিনিয়োগ করেছিল বলেই মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে অসংখ্য শিল্প গড়ে ওঠে। ব্যাংক বিমা ইত্যাদি ক্ষেত্রের সুবিধা থাকলে শিল্প গড়ে ওঠে।

6. সরকারি নীতি ও পরিকল্পনাঃ

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল সরকারি নীতি ও পরিকল্পনা। শিল্প স্থাপনে সরকারের আগ্রহ, শুল্ক ও লাইসেন্স নীতি, পরিবেশ আইন শিল্প স্থাপনকে প্রভাবিত করে। ভারত সরকারের ১৯৯১, ২০০২ ও ২০০৬ সালের শিল্প নীতির কারনেই অসংখ্য বিদেশি ও বহুজাতিক সংস্থা এদেশে শিল্প স্থাপন করেছে।

 

আরো পড়ুন ঊনবিংস শতকের ইউরোপ, Short Question & Answer

আরো পড়ুন প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ-বৈশিষ্ঠ ও বিশ্লেষণ ছোট প্রশ্নোত্তর

 

অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারন এর এই আর্টিকেলটি পুরো পড়ার জন্য।এভাবেই চিরদিন www.artsschool.in ব্লগের পাশে থেকে তোমাদের Support দেখিয়ো যাতে ভবিষ্যতে আমরা আরো গুরুত্বপূর্ণ Notes বা Study Material তোমাদের সামনে তুলে ধরতে পারি।

 

কোনো স্থানে শিল্প গড়ে ওঠার কারন এর এই আর্টিকেলটি নিয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো জিজ্ঞাসা বা অভিযোগ থেকে থাকে তবে আমাদের জানান ইমেল এর মাধ্যমে। আমাদের ইমেল এর ঠিকানা – [email protected] Thank You.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!