ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন, wbbse board এর নবম শ্রেণীর ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় হল বিংশ শতকের ইউরোপ আর এই অধ্যায়েরই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন কী ছিল? যা কিনা বার্ষিক পরীক্ষার ৫ নম্বরের প্রশ্নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাই আজকে আমরা আমাদের আলোচনার বিষয় হিসাবে বেছে চিয়েছি নবম শ্রেণীর ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়ের ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারনগুলি কী ছিল? এই প্রশ্নটিকে। আজকে আমরা একে একে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন গুলি দেখবো।
কিন্তু সেই একই অনুরোধ আবারও ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন কী ছিল? এই প্রশ্নের উত্তরটি দেখার আগে তোমরা যদি পাঠ্যবই থেকে বিষয়টি একবার ভালো ভাবে পড়ে নাও তাহলে তোমাদের এই ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন বুঝতে কোনো অসুবিধায় হবে না।
ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারনগুলি কী ছিল?
উত্তরঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উইলিয়ামের পদত্যাগের ফলে জার্মানিতে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ফ্রেডরিখ ইবার্টের নেতৃত্বে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ভাইমার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রজাতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে নাৎসি নেতা হিটলার জার্মানির ক্ষমতা দখল করেন।
রাজধানী বার্লিনে গোলযোগের কারনে নিকটবর্তী ওয়েমার শহরে এই সরকারের কর্মকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এজন্য এটি ভাইমার (ওয়েমার) প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত। কিন্তু বিভিন্ন কারনে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে জার্মানির ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতন ঘটে।
ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারনগুলি হল নিম্নরূপঃ
১. ভার্সাই সন্ধির ত্রুটিঃ প্রজাতান্ত্রিক সরকার ভার্সাই সন্ধি স্বাক্ষর করায় এই সরকার জার্মান বাসির কাছে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত হয়। তাই প্রথম থেকেই এই সরকারের প্রতি মানুষের সমর্থন ছিল না। যার ফলে জনগণের মন জোগাতে না পারায় এই সরকারকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে হয়।
২. কর্মচারীদের বিরোধিতাঃ কাইজারের আমলের সরকারি কর্মচারীরা এই সরকারের প্রতি আনুগত্য দানের পরিবর্তে বিরোধিতা করায় সরকার প্রবল সমস্যার সন্মুখিন হয়। যার ফলে একদিকে যেমন সকল জনগণ মন থেকে কখনোই সরকারকে মেনে নিতে পারছিল না অন্যদিকে সরকারী কর্মচারীরাও তাদের পাশে না থাকায় সরকার টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠে।
৩. স্ট্রেট্ম্যানের মৃত্যুঃ প্রজাতান্ত্রিক সরকারের স্বল্পকালীন চ্যান্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গুস্টাভ স্ট্রেট্ম্যান দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুতে প্রজাতান্ত্রিক সরকার জোর ধাক্কা খায় এবং পতনের দিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে জায়।
আরো পড়ুন ফরাসী বিপ্লবের কয়েকটি দিক অধ্যায় থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
৪. সংহতির অভাবঃ ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন গুলির মধ্যে অন্যতম একটি কারন হল সংহতির অভাব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যদের নিয়ে প্রজাতান্ত্রিক সরকার ও তার মন্ত্রীসভা প্রতিষ্ঠিত ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে সংহতি সমন্বয় বা ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি সম্পাদনের মানসিকতার যথেষ্ট অভাব থাকায় সরকার দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
আরো পড়ুন গ্রহরুপে পৃথিবী ছোট প্রশ্ন ও উত্তর class 9 2021
৫. মহামন্দাঃ ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বব্যপী অর্থনৈতিক মহামন্দার প্রভাবে দেশে বেকারত্ব দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যাভাব চরম আকার নেয় এবং সরকার এই সময় এতটায় দুর্বল যে তারা এই সমস্যা গুলি দেশ থেকে দূর করতে পুরো পুরি ব্যর্থ হয় যার ফলে জনগণের সমস্যা দূরীকরণে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারেরও পতন নিশ্চিত হয়ে যায়।
আরো পড়ুন নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ নবম শ্রেণী
৬. গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অভাবঃ ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারনগুলির মধ্যে আরো একটি অন্যতম কারন হল গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অভাব। জার্মান বাসী রাজতন্ত্র ও সামরিক স্বৈরশাসনেই অভ্যস্ত ছিল। তায় প্রজাতান্ত্রিক সরকার তেমনভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি। যার ফলে এই সরকারের চরম পরিণতি ঘটে।
ঐতিহাসিক ডেভিড টমসন বলেছেন যে, “জার্মানির যুদ্ধ পরবর্তী প্রতিকুল সামাজিক কাঠামোয় ভাইমার প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা খুবই মুশকিল ছিল”।
আরো পড়ুন ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের ভুমিকা বা অবদান লেখ
আরো পড়ুন আবহবিকার, ক্লাস নাইন, ছোট প্রশ্ন ও উত্তর
অবশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে এই ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারনগুলি কী ছিল? পোস্টটি পড়ার জন্য। এভাবেই চিরদিন https://artsschool.in এর এই ব্লগের পাশে থাকুন যাতে ভবিষ্যতে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারন কী ছিল? এর মতো আরো উন্নত মানের Study material & Notes আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারি। একটাই অনুরোধ করবো নিয়মিত আমাদের এই ব্লগে Visit করুন এবং নিজের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলুন।
বিঃ দ্রঃ এই আর্টিকেলের “ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের কারনগুলি কী ছিল?” এই প্রশ্নের উত্তরটি কিছু অভিজ্ঞ শিক্ষক ও কিছু বইয়ের সাহায্যে এবং নিজের চেষ্টায় তৈরি। শিক্ষকদের অনুমতি নেওয়া হলেও প্রকাশকদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়ে ওঠেনি। এবিষয়ে আপনাদের কারো যদি কোনো অসুবিধা থাকে তবে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে এবং জানান আপনার কথা।